পাবনা শহরে হাংরি পাবনার আয়োজনে চতুর্থবারের মতো নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে চলছে খাদ্য ও ফ্যাশন মেলা। জেলা পর্যায়ের ৩৪ জন নতুন ও পুরনো নারী উদ্যোক্তা এবারের মেলায় অংশ নিয়েছেন।
জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র পৌর মিলনায়তন মাঠে আয়োজিত এ মেলায় ক্রেতাদের ভিড় লক্ষণীয়। হোমমেড খাবার ও দেশি সুতি কাপড়সহ হস্তশিল্পের বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন নারী উদ্যোক্তারা।
১০ দিনের মেলায় অর্ধকোটি টাকার পণ্য বিক্রির সম্ভাবনা দেখছেন আয়োজকরা।
২০১৯ সালে করোনা মহামারির সময়ে কর্মহীন নারী ও পুরুষদের ঘরে বসে বিকল্প উপায়ে কর্মের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ করে দেয় হাংরি পাবনা নামে অনলাইন ফেসবুক পেজ। এ জেলার কিছু নারী সেই সময়ে হোমমেড খাবার তৈরি করে এ পেজে পোস্ট করে ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু করেন। সেই যাত্রাপথের সংগ্রামী নারীরা আজ নিজেরা ছোট বড় উদ্যোক্তা হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। ব্যবসায়িক প্রচার প্রসারের লক্ষ্যে প্রতি বছর হাংরি পাবনা নামে অনলাইন ফেসবুক পেজে যুক্ত নারী উদ্যোক্তারা জেলায় এ মেলার আয়োজন করে আসছেন। এ ফেসবুক প্লাটফর্মে বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।
আর ফেসবুক পেজে গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার।
বর্তমানে জেলায় ফ্যাশান নিয়ে কাজ করছেন প্রায় এক হাজার নারী ও পুরুষ। অন্যদিকে খাদ্য নিয়ে কাজ করছেন পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ উদ্যোক্তা।
এর মধ্যে জেলার প্রায় ১০ জন নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তার তৈরি করা হস্ত ও কুটির শিল্পের পণ্য দেশের বাইরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়নি।
মেলায় স্টল দিয়েছেন এমন কয়েকজন উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেলায় বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে ক্রেতাদের। তবে সুতা ও কাপড়ের দাম বেশি। এজন্য সল্প সুদে সরকার ঋণের ব্যবস্থা যদি করত, তাহলে উদ্যোক্তাদের জন্য সুবিধা হতো। হাংরি পাবনার মাধ্যমে আজ নারী উদ্যোক্তারা অনেক এগিয়ে গেছেন। যুব উন্নয়ন ও মহিলা অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আজ নিজেরা কিছু করার চেষ্টা করছেন। মাসিক আয় বেশ ভালো হচ্ছে তাদের।
মেলার সমন্বয়ক নারী উদ্যোক্তা ইলোরা লেয়া বলেন, করোনাকালে সবাই ঘরবন্দি হয়ে পড়েছিলেন। আর সেই সময়ে নারীরা নিজেদের প্রচেষ্টায় তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। হাংরি পাবনার মাধ্যমে উদ্যোক্তা তৈরি করে আজ এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মেলার উদ্যোক্তা হাংরি পাবনার অ্যাডমিন দেওয়ান মাহাবুব বলেন, শিক্ষিতদের বেকারত্ব দূর করতে হাংরি পাবনা জেলার নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ আয়োজন করে আসছে। নারীদের যদি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা যায়, তাহলে সোনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। ঘরে বসে খাবার ও পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য তৈরি করে তারা বিক্রি করছেন। এখন আমাদের উদ্যোক্তাদের পণ্য শুধু বাংলাদেশে নয়, দেশের বাইরেও যাচ্ছে।
চলতি মাসের ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া মেলা শেষ হবে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি।
প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ সবার জন্য খোলা থাকে।