এখন দেশি বরইয়ের মৌসুম। কাঁচা-পাকা এসব দেশি বরই দেখলেই জিভে পানি চলে আসতে দেরি হয় না।কেননা সোনালি অতীত সেই সব কাঁচা-পাকা ফলের স্বাদ নেওয়া ছিল বড়ই অভ্যস্ত। দিনগুলো হারিয়ে গেলেও ফলের দিকে চোখ পড়লেই স্মৃতি যেন ভেসে উঠে। এখন বাজারে প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে কাঁচা-পাকা বরই। বরইয়ের মজাদার আচার বানিয়ে খেতে পারেন বছরজুড়ে। জেনে নিন কীভাবে আচার বানাবেন বরই দিয়ে।
উপকরণ: বরইদুই কেজি, হলুদ গুঁড়া দুই চামচ, মরিচ গুঁড়া চার চা-চামচ, লবণ ছয় চা-চামচ, সিরকা আধা কাপ, পাঁচফোড়ন গুঁড়া চার চা-চামচ, তেজপাতা দুটি, আদা বাটা তিন টেবিল চামচ, রসুন বাটা পাঁচ টেবিল চামচ, সরিষা বাটা ছয় টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ আটটি, চিনি এক কাপ, সরিষার তেল তিন কাপ।
প্রণালি: প্রথমে বরই লবণ দিয়ে সেদ্ধ করুন। এবার একটা পাত্র চুলায় দিয়ে গরম করুন এবং তেল দিন। তেল গরম হলে তেজপাতা ও শুকনা মরিচ ভেজে সব মসলা ও দিয়ে ছয় মিনিট কষিয়ে নিন। মসলা কষানোর সময় পানির পরিবর্তে সিরকা দিন। সেদ্ধ বরইগুলো দিয়ে নাড়তে থাকুন কিছুক্ষণ পর চিনি দিন। বরইয়ের পানি শুকিয়ে তেল উঠে এলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে স্বচ্ছ বোয়ামে ভরে রাখুন। দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য মাঝে মাঝে আচার রোদে রাখুন।
বরই খাওয়ার উপকারিতা: আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রজাতির বরই রয়েছে। এতে ভিটামিন ‘সি’ গলার ইনফেকশনজনিত অসুখ (যেমন: টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঠাণ্ডাজনিত লালচে ব্রণের মতো ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া) দূর করে। বরইয়ের রস অ্যান্টি-ক্যানসার ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে রয়েছে ক্যানসার সেল, টিউমার সেল, লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ শক্তি।
উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকারি। রক্ত বিশুদ্ধকারক হিসেবে এই ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। ডায়রিয়া, ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে রক্তশূন্যতা তৈরি হওয়া, ব্রঙ্কাইটিস— এসব অসুখ দ্রুত ভালো করে বরই।
রুচি বাড়ানোর জন্যও এই ফলটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিজনাল জ্বর, সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে গড়ে তোলে প্রতিরোধ। নিদ্রাহীনতা দূর করে এই ছোট ফল। আমাদের কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে বরই। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলটি ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে। তারুণ্য ধরে রাখে।