পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভারত সব সময় আমাদের পাশে ছিল এবং আছে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। দেশে সুষ্ঠু, সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং জনগণের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছিল। সব কিছু ছাপিয়ে ভালো এবং উৎসবমুখর নির্বাচন হয়েছে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভারত আমাদের পাশে ছিল, আছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়েও অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল, ভারত তখন আমাদের পাশে ছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ভারত তখনো আমাদের পাশে ছিল। এবারও গণতন্ত্র রক্ষায় ভারতের অবস্থান কী ছিল আপনারা জানেন।
তিনি বলেন, আমাকে দিল্লি সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমরা সময়টা দেখছি, কখন আমার জন্য এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য সুবিধাজনক হয়। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর স্পষ্টত চাচ্ছি ভারত হবে।
বহুপাক্ষিক সফরে আগামী ১৭ জানুয়ারি উগান্ডা যাবেন বলেও জানান হাছান মাহমুদ।
ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। এরপরও আমরা নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষত, আমরা কানেকটিভিটি ইস্যুতে আলোচনা করেছি। বর্ডার হাট নিয়ে আলোচনা হয়েছে, বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় রুপি এবং বাংলাদেশের টাকার বিনিময় সংক্রান্ত বাণিজ্য—এটিকে সম্প্রসারণ করা। এটি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে, অল্প বিস্তর বাণিজ্য হয়েছে। এটিকে সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয় করা যায় সবার কাছে, এ নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এটি জনপ্রিয় করা গেলে ডলারের ওপর বা অন্য মুদ্রার ওপর প্রভাব কমবে। আমাদেরও কমবে, ভারতেরও কমবে। বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সেটি সহায়ক হবে।
সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয় আগের মন্ত্রিসভার তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে। নতুন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পাওয়ার পর হাছান মাহমুদের সঙ্গে কোনো বিদেশি দূতের এটি ছিল প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের পণ্য বহন করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ সংক্রান্ত বিষয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ছোট-খাটো কিছু বিষয় আছে সেগুলো হয়ে গেলে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে রামগড় ও আখাউড়া দিয়ে পণ্যের পরিবহন স্থিতিশীল হবে।
চীনের প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প এবং কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (সেপা) নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়নি। সেপা নিয়ে আজকে সেভাবে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে আমাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, যারা রাজনীতি করে না, যারা সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করে তাদের সঙ্গে তো আলোচনার কোনো কিছু নেই।