‘মাইরের ওপরে ওষুধ নাই’ বলে হুমকি দেওয়া নরসিংদীর আলোচিত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনের জামিন মুঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে হাইর্কোটের বিচারক হাবিবুল গণি ও আহম্মেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ব্যাঞ্চ তার জামিন মুঞ্জুর করেন।
ছাত্রলীগ সভাপতির আইনজীবী ব্যারিস্ট্যার আদনান সরকার সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চলতি মাসের ১ তারিখ রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নরসিংদী ডিবি পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ২০ দিন কারাভোগের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিন পান তিনি।
নরসিংদী সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম একমি বলেন, সভাপতি আজকে হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিন পেয়েছেন। জামিনের কাগজপত্র ডাকযোগে হাইকোর্ট থেকে নরসিংদী কারাগারে পাঠানোর পর আগামীকাল তিনি মুক্তি পাবেন। প্রিয় নেতার জামিনের খবরে জেলা ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মী আনন্দিত।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ নভেম্বর বুধবার নরসিংদী ক্লাবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম হিরুর (বীর প্রতিক) একটি মতবিনিময় সভা হয়। সভায় নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন তার বক্তব্যে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পেটানোর হুমকি দেন। মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেছেন, কোনো স্বতন্ত্র মতন্ত্র আমরা চিনি না, মাইরের ওপর কোনো ওষুধ নাই। ছাত্রলীগের কোন পোলাপান স্বতন্ত্ররে মানতো না। সতন্ত্ররে কেমনে পিডাইতে হয়, হেই দেখাইছে। হেরে আমরা হেমনেই পিডামো। এ শহরে, এ সদরের কোনো এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কোনো জায়গা দেওয়া যাবে না। তারা নৌকার বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, তারা দেশ বিরোধী।
তার এমন বক্তব্যে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নরিসংদী নির্বাচনী কর্মকর্তা সহকারী রিটানিং অফিসার ওমর ফারুক বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। একই সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম ওরফে রিমনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চায় ওই আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।
এ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সদস্য নরসিংদীর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নাহিদুর রহমান নাহিদ। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলেতার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
১১ দিন জেলহাজতে থাকা অবস্থায় গত ১১ ডিসেম্বর সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিমনের জামিন শুনানির জন্য আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানির পর আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠায়। অবশেষে বৃহস্পতিবার ২০ দিন কারাভোগ পর হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিন পান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
জেএইচ