জাতীয় নির্বাচনের তফসিল আসলে কবে

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল আসলে কবে

সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সংসদ বহাল রেখে আগামী নির্বাচন করতে হলে, তা করতে হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হবে চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে, নভেম্বরের আগে তফসিল ঘোষণার সুযোগ নেই। অবশ্য জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচন হলে সেটা ভিন্ন বিষয়।  

আজ বৃহস্পতিবার দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তিনি অনুমান করে বলতে পারেন, আগামী সেপ্টেম্বরের কোনো একটা সময়ে তফসিল ঘোষণা করবেন। তাঁর এই বক্তব্য প্রচারিত হওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা শুরু হয়েছে। তাহলে কী নির্বাচন আগাম অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রশ্নও সামনে এসেছে।

এ বিষয়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁর বক্তব্যটি ছিল অনুমাননির্ভর। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল নিয়ে তাঁরা এখনো কমিশনে আলোচনা করেননি।

ওই টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে সিইসির কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘আপনারা রোডম্যাপে উল্লেখ করেছেন যে এই বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে কিংবা আগামী বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে জাতীয় নির্বাচন করতে চান। সংবিধানও সেটা বলছে। সে ক্ষেত্রে তফসিল কোন মাসে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে?

জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমার যত দূর মনে পড়ে, ৯০ দিন আগে তো করতে হবে। সেপ্টেম্বরের আগে এটা হওয়ার কথা না। আমরা এখনো এটা স্থির করিনি। তবে অনুমান করে বলতে পারি, সেপ্টেম্বরের কোনো একটা সময়ে শেষের দিকে বা মাঝামাঝি সময়ে আমরা তফসিল ঘোষণা করব।’

এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, সাক্ষাৎকারে তাঁর যে বক্তব্য, সেটা ছিল অনুমাননির্ভর। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নিয়ে কমিশনে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ (২৯ জানুয়ারি) দিক থেকে আগের ৯০ দিন।

সিইসি বলেন, কবে তফসিল ঘোষণা করতে হবে, সেটা আইনে উল্লেখ নেই। সেটা ৫০, ৬০ বা ৭০ দিন আগেও হতে পারে, অক্টোবরের শেষেও হতে পারে।

সংবিধানে বলা আছে, জাতীয় সংসদের মেয়াদ-অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে যাওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। ফলে সংবিধান অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা আছে। তবে সংসদের মেয়াদ পূর্তির ৯০ দিনের আগে তফসিল ঘোষণা করা যাবে কি না, তা আইনে স্পষ্ট করে উল্লেখ নেই।

ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণা মানে নির্বাচন শুরু হওয়া। সংসদের মেয়াদপূর্তির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের আগে তফসিল ঘোষণা করার সুযোগ নেই।  

অবশ্য সংবিধানে এর আগেও নির্বাচন করার সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে মেয়াদপূর্তির আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংবিধানে বলা আছে, ‘মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ অর্থাৎ যেদিন সংসদ ভাঙবে, তার পরের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS