আফগানি চাপও ‘সুস্বাদু’ মিরাজের কাছে

আফগানি চাপও ‘সুস্বাদু’ মিরাজের কাছে

দুই হাতে দুই ব্যাট নিয়ে একাডেমি মাঠের দিকে যাচ্ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যাওয়ার পথে দেখা হতেই হেসে বললেন, ‘যাই, ব্যাটিং প্র্যাকটিসটা করে আসি। এখন তো এটাই আসল।’

আফগানিস্তান সিরিজ, এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এবং এরপরই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ দলের চিন্তার স্রোতে এখন তাই শুধু ওয়ানডে ক্রিকেটটাই বহমান। ৫ জুলাই চট্টগ্রামে শুরু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ এবং পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপটা হবে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি মাথায় রেখেই।

যে জায়গায় খেলেন, অফ স্পিনের পাশাপাশি মিরাজের কাছে ব্যাটিংয়েও বিশেষ কিছুর আশা থাকে বাংলাদেশের। ব্যাটিং অনুশীলনটা সে কারণেই বেশ গুরুত্বপূর্ণ তাঁর কাছে। আজ বিকেলে ওয়ানডে সিরিজের অনুশীলনের প্রথম দিন শেষে এই অলরাউন্ডার আরেকবার বললেন, ওয়ানডের সবকিছুই এখন কেন গুরুত্বপূর্ণ তাঁদের কাছে, ‘আমাদের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। সেভাবেই আমরা পরিকল্পনা করছি, খেলছি। সামনে কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই, এখন শুধু ওয়ানডে নিয়ে চিন্তা।’

ভারতের বিশ্বকাপে রানের ফোয়ারা থাকবে, এমন ধারণা নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছে সব দল। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। ‘আমরা জানি বিশ্বকাপে কী রকম খেলা হয়। কী টেম্পারামেন্টে খেলা হয়, কী রকম রানের প্রবাহ থাকে। আমরা চেষ্টা করছি সেভাবে সবকিছু করতে। আয়ারল্যান্ড সিরিজটা দেখেন, ৩০০-এর বেশি রান হয়েছে। বিশ্বকাপে কিন্তু বেশির ভাগ ম্যাচই এই রকম হবে। ৩০০-৩৫০ রান হবে। এই জিনিসগুলো কীভাবে ধারাবাহিকতা ধরে রেখে করতে পারি, সেসব নিয়েই অনুশীলন হচ্ছে’—বলেছেন মিরাজ।

আফগানিস্তান সিরিজে রশিদ খান-মোহাম্মদ নবীদের মতো স্পিনাররা বাংলাদেশের বাড়তি মনোযোগ পাবেন স্বাভাবিক। বাংলাদেশকে যদি তাঁরা চাপে ফেলেনও, সেটা হয়তো এই অস্ত্র দিয়েই ফেলবেন।

তবে মিরাজের কথা শুনে মনে হলো, ‘আফগানি চাপ’ কাটিয়ে ওঠাটাও এখন আনন্দময় এক চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের জন্য, ‘সাদা বলে ওরা অনেক ভালো দল। ওদের ভালো কিছু স্পিনার আছে। তবে আমরা কিন্তু ওদের সঙ্গে আলহামদুলিল্লাহ সব সময় জিতি। গত সিরিজ জিতেছি, বিশ্বকাপেও আমরা ওদের হারিয়েছি। ওরা কিছু সময়ের জন্য আমাদের চাপে ফেলে। কিন্তু আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারি।’

ভারত বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে আফগানিস্তান সিরিজটা স্পোর্টিং উইকেটেই খেলার পরিকল্পনা বাংলাদেশের। মিরাজের কথায়ও সেটাই এল, ‘অবশ্যই আমরা ট্রু উইকেটে খেলবে, যাতে ব্যাটাররা রান করতে পারে। বোলাররা যেন ভালো উইকেটেও উইকেট বের করতে পারে। রান চেক দিতে পারে। আশা করি, আমাদের এই রকমই পরিকল্পনা থাকবে।

তবে ক্রিকেট খেলাটাই এমন যে সব ঠিকঠাক করেও আপনার দল হেরে যেতে পারে, যদি প্রতিপক্ষ তাদের সবকিছুতে আপনার দলের চেয়েও বেশি ভালো করে। তাই বলে হেরে যাওয়া দলটা খারাপ হয় গেল, তা নয়। পরের ম্যাচেই সুযোগ থাকে ফিরে আসার।

সেটা মনে করিয়ে দিয়ে মিরাজ বলেছেন, ‘আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলছি। এই সিরিজ যদি হেরেও যাই বা খারাপও খেলি, এর মানে এই নয় যে আমরা খারাপ দল হয়ে গেছি।’ সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, ‘গত কয়েক দিনে আমরা যে রকম খেলেছি, বিশ্বকাপ শুরুর আগে যে পয়েন্ট টেবিলটা যে রকম, এটা কিন্তু একটা বার্তা দেয়—ওয়ানডেতে দল হিসেবে আমরা ভালো খেলেছি। বড় বড় দলগুলোও কিন্তু বাছাইপর্ব খেলছে। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের এ বছর সেটা খেলতে হচ্ছে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS