রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের এক নেতাসহ সংগঠনের ১২-১৩ জনের বিরুদ্ধে পর্যটন মোটেলে মদ্যপান করে গ্লাস ও মুঠোফোন ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মোটেল কর্তৃপক্ষ গেটে তালা দিয়ে তাঁদের আটকে পুলিশের খবর দেয়। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা গিয়ে সমঝোতা করেন। একপর্যায়ে বিল পরিশোধ করে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম ইশতিয়াক আহমেদ। তিনি রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
এ বিষয়ে নগরের রাজপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজল কুমার নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা নিজেরাই মীমাংসা করে নিয়েছিলেন। যেহেতু পুলিশ ডাকা হয়েছিল, তাই পুলিশ গিয়ে মীমাংসার কাগজটা নিয়েছে।
রাজশাহী পর্যটন মোটেল সূত্র জানায়, গতকাল রাত নয়টার দিকে ইশতিয়াক আহমেদসহ ছাত্রলীগের ১২-১৩ জন নেতা-কর্মী রাজশাহী পর্যটন মোটেলে মদ পান করেন। এ সময় তাঁদের বিল হয় ৭ হাজার ২০০ টাকা। একপর্যায়ে বিল না দিয়ে তাঁরা বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন মোটেলের লোকজন বিল চাইলে তাঁরা নিজেদের ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেন।
এরপরও বিল চাওয়ায় তাঁরা মোটেলের কয়েকটি গ্লাস ভাঙচুর ও দুজন কর্মচারীকে মারধর করেন। মোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশে কল দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুটি মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এরপর মোটেল কর্তৃপক্ষ গেটে তালা দিয়ে নগরের রাজপাড়া থানায় খবর দেন। এর মধ্যে ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতাদের কল দেন আটকে পড়া নেতারা।
নগরের রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল হাসান গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। ছাত্রলীগ নেতারা ভুল স্বীকার করেন এবং পুলিশের কাছে মুচলেকা দেন। এরপর ৭ হাজার ২০০ টাকা বিল পরিশোধ করলে রাত ১০টার দিকে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ধরেননি। রাজপাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাবিল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন। তাঁরা নিজেরাই ভুল স্বীকার করেছেন। মুঠোফোন দুটিও মেরামত করে দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপক আবদুর রাজ্জাক শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা মাঝেমধ্যেই এসে মাতলামি করেন। তখন পুলিশ ডেকে মীমাংসা করতে হয়। গতকাল মোটেলে বসেই তাঁরা মুচলেকা দিয়েছেন। এরপর মদের বিল ৭ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করেছেন। মুঠোফোন দুটিও ঠিক করে দিয়েছেন। আবদুর রাজ্জাক আরও বলেন, সবার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই তাঁদের চলতে হয়। আবার কেউ মাতলামি করলে পুলিশও ডাকতে হয়।