রুশ নেতৃত্বের অভিযোগ, ওয়াশিংটনের উৎসাহেই রাশিয়ায় হানলা চালাচ্ছে ইউক্রেন। মার্কিন প্রশাসন ও ইউক্রেন এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মস্কোয় হামলা নিয়ে এখনো বিভ্রান্তি কাটছে না।
দিনের পর দিন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করে চলেছে রাশিয়া। বিশেষ করে চলতি মে মাসে হামলার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। রাশিয়ার ভূখণ্ডে বিচ্ছিন্ন ড্রোন হামলার পর এবার খোদ রাজধানী মস্কোর উপর একই সঙ্গে একাধিক ড্রোন হামলা মস্কোর অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কেউ সেই হামলার দায় স্বীকার না করলেও রাশিয়া ইউক্রেনকেই এর জন্য দায়ী করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠছে সে দেশ। মস্কোর ধারণা, মার্কিন প্রশাসনই ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালাতে উৎসাহ দিচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসন অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সে দেশ রাশিয়ার মধ্যে হামলাকে সমর্থন করে না। স্পষ্ট ধারণা পেতে ওয়াশিংটন মস্কোয় ড্রোন হামলার ঘটনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে বলে জানিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলইয়াক মস্কোর উপর হামলার জন্য সরাসরি দায় স্বীকার না করলেও এমন ঘটনা ‘উপভোগ’ করছেন বলে জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে আরও এমন হামলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, আত্মরক্ষার তাগিদে রাশিয়ার ভূখণ্ডের উপর হামলার অধিকার ইউক্রেনের অবশ্যই রয়েছে। তবে তিনি সরাসরি মস্কোর উপর হামলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।
মস্কোয় ড্রোন হামলার ঘটনা সম্পর্কে বিভ্রান্তি এখনো কাটছে না। রুশ কর্তৃপক্ষ আটটি ড্রোনের উল্লেখ করলেও বাস্তবে আরও অনেক বেশি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী তিনটি ড্রোন বিকল হয়ে পড়ে এবং পাঁচটি ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা যতই হোক না কেন, সেই ড্রোনের উৎস সম্পর্কে এখনো প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি। খোদ রুশ ভূখণ্ড থেকে মস্কোয় ড্রোন হামলা চালানো হয়ে থাকলে রাশিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলির দক্ষতা ও ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। ইউক্রেন থেকে এত দুরে ড্রোন পাঠানো হয়ে থাকলেও সামরিক বাহিনীর সতর্কতা সংশয়ের মুখে পড়বে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এমন ঘটনা ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’র প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে।
এদিকে কিয়েভের উপর এই নিয়ে তিন রাত ধরে জোরালো হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাতে ২০টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে শহরের সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে। ড্রোনের টুকরো ভেঙে পড়ায় একটি ভবনের ক্ষতি হয়েছে। সেই ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত ও একজন আহত হয়েছে। ড্রোনের জ্বলন্ত টুকরোর আঘাতে সেই আবাসনের ব্লকে আগুন ধরে গেছে। অন্যান্য কিছু এলাকায়ও ড্রোনের ভাঙা টুকরোর কারণে ঘরবাড়ি ও গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।