খাবারে ফাইবার বা আঁশের গুরুত্ব এখন সর্বজনবিদিত। ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তে শর্করা ও চর্বির মাত্রা কমানো এবং বৃহদন্ত্রের ক্যানসারসহ নানা রোগ প্রতিরোধে চিকিৎসকেরা নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
উদ্ভিদজাত খাদ্য থেকেই মূলত এই আঁশ পাওয়া যায়। আঁশ দুই ধরনের, দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয়।
শরীর সুস্থ রাখতে উভয় ধরনের আঁশই প্রয়োজনীয় এবং রোগ প্রতিরোধে এদের ভূমিকা ভিন্ন ভিন্ন।
দ্রবণীয় আঁশের উপকারিতা
দ্রবণীয় আঁশ পানিতে মিশে জেলের মতো পদার্থ তৈরি করে এবং পানি শোষণ করে আয়তনে বাড়ায়। এই ধরনের আঁশসমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে, ওটমিল, শিমজাতীয় খাবার (মটর, শিম, ডাল), বার্লি, ফল ও সবজি যেমন কমলা, আপেল ও গাজর।
দ্রবণীয় আঁশ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, গ্লুকোজের শোষণ কমায়, ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং অন্ত্রের স্বাভাবিক নড়াচড়া বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অদ্রবণীয় আঁশের উপকারিতা
অদ্রবণীয় আঁশ পানিতে মেশে না এবং প্রায় অপরিবর্তিত অবস্থায় পাচনতন্ত্র দিয়ে বের হয়ে যায়। বিভিন্ন বীজ, ফলের খোসা, গমের রুটি ও বাদামি ভাতে এই আঁশ পাওয়া যায়।
অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অদ্রবণীয় আঁশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
সব ধরনের আঁশযুক্ত খাবারেই প্রচুর খনিজ ও ভিটামিন থাকে, যা শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আঁশযুক্ত খাবার বাড়াবেন যেভাবে
জুসের পরিবর্তে আস্ত ফল বিচিসহ খান। এতে বেশি আঁশ পাওয়া যায়।
প্রতিদিন অন্তত পাঁচ ধরনের ফল ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন।
প্রক্রিয়াজাত শস্যের বদলে পূর্ণশস্য যেমন লাল আটা, লাল চাল, পাস্তা ইত্যাদি বেছে নিন।
মাংসের পরিমাণ কমিয়ে বাদাম, বিনস, শস্য, ছোলা ও ডাল বেশি খান।
সাদা চালের পরিবর্তে বাদামি চালের ভাত খাওয়ার অভ্যাস করুন।
আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। কারণ আঁশ শরীরে পানি শোষণ করে এবং পানি কম হলে হজমের সমস্যা হতে পারে।