৬ বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহৃত’ কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ মিলল ফেনীতে

৬ বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহৃত’ কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ মিলল ফেনীতে

ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে নিখোঁজ হওয়া কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদের (৪৬) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ফেনী থেকে। ২০১৯ সালের ৭ মে চট্টগ্রাম থেকে তাকে ‘অপহরণ’ করা হয় বলে অভিযোগ তার পরিবারের। সদস্যরা বলছেন, ওইদিনের পর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছিল না। 

দীর্ঘ ছয় বছর পর বুধবার (২৯ অক্টোবর) ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল নিহত ব্যক্তি স্থানীয় কোনো দিনমজুর। তবে তার পকেটে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়। এরপর চট্টগ্রামের কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদ হিসেবে তার পরিচয় নিশ্চিত হয় এবং পরিবারকে খবর দেওয়া হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আহাদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ভূইগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মো. ইমানি মিয়ার ছেলে। স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে তার। কর্মজীবনের শুরুতে একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও পরে কাস্টমস বিভাগে যোগ দেন। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সর্বশেষ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করেন আহাদ। সেখান থেকেই তিনি নিখোঁজ হন।

নিহতের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন বলেন, আমার ভাই চট্টগ্রামে একাই থাকতেন। ২০১৯ সালের ৭ মে ভোরে ভাবিকে ফোন দিয়ে জানানো হয় যে ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে ভাবি দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দেন, কিন্তু ভাই আর ফিরে আসেননি।

নাঈমা আরও জানান, তার ভাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন, তবে কোনো পদে ছিলেন না। কেন তাকে অপহরণ করা হলো, কেন গুম করা হলো— তারা কিছুই জানেন না। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান তিনি।

ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আহাদের মরদেহ কীভাবে এল, তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তারা বলছে, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আহাদ এত দিন কোথায় ছিলেন, সে ব্যাপারেও পুলিশ সদস্যরা কোনো ধারণা দিতে পারেননি।

নিহতের ভাগনে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অপহরণের পর আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছি, সংবাদ সম্মেলনও করেছি। কিন্তু মামার কোনো খোঁজ মেলেনি। এখন তার মরদেহ পাওয়ার পর আমরা ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।

ছাগলনাইয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম জানান, নিহত কাস্টমস কর্মকর্তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে ছয় বছর আগের অপহরণের যে তথ্য জানানো হয়েছে, পুলিশ সেটি যাচাই করছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মনে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS