মিটেকড়া-ভীমরুল খ্যাত কলামিস্ট, প্রখ্যাত সাংবাদিক আহমেদুর রহমান ৫৮তম প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৬৫ সালের ২০ মে মিশরের কায়রোতে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আরও ২১ যাত্রী নিহত হন।
আহমেদুর রহমান ‘মিটেকড়া’ শিরোনামে ‘ভীমরুল’ ছদ্মনামে কলাম লেখতেন দৈনিক ইত্তেফাকে।
আহমেদুর রহমান ছিলেন কায়মনে বাঙালি। ছিলেন তৎকালীন সুপরিচিত প্রাবন্ধিক, রম্যলেখক, সাংবাদিক ও সংগঠক। ১৯৫২ সালে দৈনিক মিল্লাতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি কাজ করেছেন রেডিওতে। এরপর যোগ দেন দৈনিক ইত্তেফাকে। ইত্তেফাকে যোগদানের পূর্বে তিনি তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে শর্ত দিয়েছিলেন, আমাকে একটি কলম দিবেন, আমি স্বাধীনভাবে লিখবো।
ইত্তেফাকে যোগদান করে ‘মিটেকড়া’ শিরোনামে ‘ভীমরুল’ ছদ্মনামে লিখতেন। এর আগে লিখতেন ‘কালকেউটে’, ‘স্পষ্টভাষী’ এমন সব ছদ্মনামে। তার উপসম্পাদকীয়-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিলো হাস্যরস, তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ আর দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি। ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের বিষয়টিকে এমন শিল্পের পর্যায়ে নিয়েছিলেন যে, তার কলামগুলো তুমুল জনপ্রিয় ছিল। তার সাপ্তাহিক কলাম পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পত্রিকা সাঁটানো দেয়ালের সামনে প্রতিযোগিতা হতো।
তিনি ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম একজন এবং ১৯৬১ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটিরও অন্যতম সদস্য ছিলেন।
কালকেউটে’ আহমেদুর রহমানের বিদেশ ভ্রমণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা রহিত হয় ১৯৬৫ সালে। সে বছরেই কায়রোর একটি সম্মেলনে অংশ নিতে পিআএর ফ্লাইটে চড়েছিলেন তিনি। সেটাই ছিল আহমেদুর রহমানের প্রথম এবং শেষ বিমানে চড়া। ১৯৬৫ সালের ২০ মে, মাত্র ৩২ বছর বয়সে কর্মমুখর স্বপ্নিল এই মানুষটির মৃত্যু হয় বিমান দুর্ঘটনায়।
অবিভক্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজ) -এর সভাপতি প্রতিথযশা সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিলন তার অনুজ।