বিনামূল্যে ফ্ল্যাট উপহার নিয়ে মহাঝামেলায় পড়ে গেছেন পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। এই ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ও দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী জোট ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টিউলিপের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে লন্ডনে বিনামূল্যে (উপহার) দুটি ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারকে আহ্বান জানান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনক। একদিন পর তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদটি ছেড়ে দিতে আহ্বান জানালো ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন।
উল্লেখ্য, দুর্নীতিবিরোধী জোট ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশনে ট্রান্সপ্যারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফামের মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনও রয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, টিউলিপ ব্রিটিশ সরকারে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও অর্থনৈতিক অপরাধ মোকাবিলার দায়িত্বে রয়েছেন। অথচ তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যা শপথ ভঙ্গের শামিল। তাই পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত টিউলিপের।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস বলছে, ৫ আগস্ট বাংলাদেশে পট পরিবর্তনের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয়নি বলে দাবি করেছিলেন টিউলিপ। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসেবে পরিচিত গণভবনে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনী প্রচারপত্রসহ টিউলিপের রাজনীতি সংশ্লিষ্ট অনেক বস্তু মেলে। এসবের মধ্যে রয়েছে লেবার পার্টির পোস্টার, বিদেশি বিশিষ্টজনদের উপহার দেওয়া পোশাক-গয়না, দামি কলমের মোড়কসহ রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু জিনিস।
টিউলিপ অবশ্য দাবি করেছেন তিনি কোনো ভুল করেননি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মান উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি বলেছেন, সম্প্রতি আমার আর্থিক বিষয় ও বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের যোগসূত্র নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক সংবাদ হয়েছে, যার বেশিরভাগই ভুল। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমি কোনো ভুল করিনি। তবে, সন্দেহ এড়াতে আপনি স্বাধীনভাবে বিষয়গুলি সম্পর্কে তদন্ত করতে পারেন।
এদিকে নিজের মন্ত্রীকে নিয়ে কেয়ার স্টারমার ‘নির্ভেজাল’ ধারণা রাখেন সেটিও স্পষ্ট। কেননা তার মুখপাত্র সোমবার বিকেলে বলেছেন, স্যার কেয়ার স্টারমার তার মন্ত্রীর ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ রেখেছেন।