বিকেলে বা সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েও সঙ্গী সেই প্রিয় মোবাইলফোন, আর চোখ রাস্তার বদলে ফোনের স্ক্রিনে। আড্ডা দিতে বসলেও আমরা গল্প না করে মোবাইল চালাই।
একসঙ্গে টিভি দেখতে বসলেও আমাদের চোখ থাকে মোবাইলের দিকে। প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যহারের ফলে বাস্তব জীবনে আমরা একা হয়ে যাচ্ছি। আর তাই বর্তমান যুগে একাকীত্ব একটি গভীর সমস্যা।
আমরা অনেক বেশি সময় ফেসবুকে নষ্ট করছি। কিছুক্ষণ অনলাইনে না গেলে আমাদের অস্থির লাগে। মনে হয়, কিছু মিস হয়ে যাচ্ছে। রাতে ঘুমের জন্য সময় কমে যাচ্ছে ফেসবুক ব্যবহারের ফলে। পরিবারের সময় থেকেও সময় নিয়ে নিচ্ছে এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো।
সময় থাকতে আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন, ভার্চ্যুয়াল সম্পর্কগুলো যেন আমাদের বাস্তব জীবনে প্রভাব না ফেলে। সবার কাছ থেকে নিজেকে আলাদা করে নিয়ে একা একা কখনো ভালো থাকা যায় না।
ভেবে দেখুন, পুরো বিশ্বের সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত থাকছি আমরা, অথচ আমাদের চারপাশে কেউ নেই, আমরা একা হয়ে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে হতাশা, ভুগছি বিষণ্নতায়। এই সময়ে একাকীত্বের পরিমাণ আরও বেড়েছে।
আমেরিকার করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, যদি সপ্তাহে একাধিকবার অন্তত ১০ মিনিট টানা কারো সঙ্গে কথা বলা যায়, তবে আপনার একাকীত্ব অনেকটাই দূর হবে।
হাতের ফোনটি পাশে রেখে প্রিয় মানুষের মুখোমুখি বসে দিনে কিছুটা সময় কাটালেই জীবন অনেক সুন্দর হয়ে ধরা দেবে।
আমরা প্রায়শই দেখি যে, ছেলেমেয়ে চাকরি করতে যাওয়ায় বাবা-মায়েরা একাকীত্বতে ভোগেন। কখন কখন আমাদের প্রিয় মানুষের কথা মনে পড়ে, সেসময় আমরা খুব দুঃখ পাই বা একা অনুভব করি। তখন কিন্তু আপনি ১০ মিনিট বই পড়তে পারেন। এতে আপনার একা একা লাগবে না। বরং চিন্তা, উদ্বেগ, জীবনের চাপ এবং অনেক কিছুই সহজ লাগবে। বই কিন্তু মানুষের একাকীত্ব কাটাতে খুবই উপকারী।
এছাড়া আপনার প্রিয় শিল্পীর গান শুনতে শুনতে আলমারি বা রুম গোছাতে পারেন। একাকীত্ব কমিয়ে আনার জন্য অনলাইন নির্ভরতা কমিয়ে খেলাধুলার প্রতিও একটু মনোযোগী হতে পারেন। ১০ মিনিট ব্যায়ামও করা যায়। যা রাগ, দুঃখ, হতাশাকে কমিয়ে দেবে।