হঠাৎ ত্বকে দাগছোপ?

হঠাৎ ত্বকে দাগছোপ?

হঠাৎ আয়নায় ধরা পড়ল ত্বকে কালচে ভাব পড়েছে। কিংবা ত্বকের কোনো একটি অংশ সাদা হয়ে যাচ্ছে? ত্বকের বর্ণের বৈষম্যকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় হাইপারপিগমেনটেশন।এই হাইপারপিগমেনটেশন যে শুধু মুখের ত্বকের ওপর দেখা যাবে তা নয়, শরীরের যেকোনো অঙ্গে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে ত্বক অতিরিক্ত কালচে বা অতিরিক্ত সাদা হয়ে যায়। অর্থাৎ হাইপারপিগমেনটেশন হলে আপনার আসল গায়ের রং পুরোপুরি বা আংশিক বা কোনো একটি জায়গায় রং পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে।

ত্বকের এই হাইপারপিগমেনটেশন হওয়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। বংশগত কারণে অনেক সময় ত্বকের এই সমস্যা দেখা দেয়। জন্মের পরই অনেকের ত্বকে এই সমস্যা থাকে। এই ত্বকের রং পরিবর্তন এবং প্যাচগুলোর বিকাশের জন্য বংশগত কারণও দায়ী হতে পারে। ত্বকের নানা রকম সমস্যার জন্যও এই রোগ দেখা দেয়। এমন কিছু ত্বকের রোগ রয়েছে। এর কারণে ত্বকের রোগ কালো বা সাদা হয়ে যায়।

ভিটামিনের অভাবও ত্বকের এই হাইপারপিগমেনটেশনের জন্য দায়ী। শরীরে ভিটামিন এ, ই, সি এবং বি কমপ্লেক্সের মতো প্রয়োজনীয় ভিটামিনগুলোর অভাব ত্বকের ওপরও প্রভাব ফেলে। ভিটামিনের অভাবের ফলে শুধু হাইপারপিগমেনটেশন নয়, বরং আরও অনেক রোগ দেখা দেয়। এর ফলে ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। তাছাড়া পেটের সমস্যা যদি থাকে তাহলেও তার ছাপ ত্বকের ওপর লক্ষ্য করা যায়। অনেক সময় লিভারে গণ্ডগোল হলে ত্বকে হাইপারপিগমেনটেশনের সমস্যা দেখা দেয়।

শরীরে হরমোনের পরিবর্তনও এই সমস্যার জন্য দায়ী। বিশেষত গর্ভাবস্থার সময় নারীদের মধ্যে যে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে অনেক সময় সেই কারণেও গর্ভাবতীদের মধ্যে এই হাইপারপিগমেনটেশনের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া এই হাইপারপিগমেনটেশনের আরও একটি সাধারণ কারণ হলো সূর্যালোক। সূর্যালোকের কারণে আমাদের ত্বকে অত্যধিক পরিমাণে মেলোনিন তৈরি হয়, এর ফলে ত্বক কালো হয়ে যায়। সাধারণ ভাষায় আমরা একে ট্যান পড়া বলে থাকি। পিগমেনটেশনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একাধিক উপায় রয়েছে। চাইলে এই তিন অ্যাসেনশিয়াল অয়েলেরও সাহায্য নিতে পারেন।

লেবুর অ্যাসেনশিয়াল অয়েল: লেবুর রস দিয়ে তৈরি অ্যাসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশের হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করা যায়। নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে লেবুর অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে ত্বকের ওপর লাগান। ধীরে ধীরে হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যা কমে যাবে।

টি ট্রি অয়েল: হাইপারপিগমেন্টেড দাগছোপ থেকে মুক্তি পেতে ত্বকে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করা শুরু করুন। টি ট্রি অয়েলের উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকলাপ ত্বককে দ্রুত মেরামত করতে কাজ করে। তার সঙ্গে এর আয়ুর্বেদিক বৈশিষ্ট্যও আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলবে।

হলুদের তেল: এটি একটি দেশীয় অ্যান্টিবায়োটিক যা ত্বক, চুল এবং স্বাস্থ্য তিনটির জন্যই একটি ওষুধের চেয়ে কম নয়। হলুদে কারকিউমিন নামক রাসায়নিক থাকে যা ত্বক মেরামতের জন্য সবচেয়ে ভালো হলুদে অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। প্রতিদিন রাতে এই তেল ব্যবহার করুন নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা হলুদের অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগান। এতেই কাজ হবে।

দাগছোপ ছাড়া অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, সুস্থ থাকতে অবশ্যই জীবনধারার পরিবর্তন করুন। ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল ও শাকসবজি খেতে হবে। তৈলাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। শরীরকে হাইড্রেট রাখুন। বাইরে গেলে অবশ্যই ত্বকে সানস্ক্রিম মাখবেন ও ছাতা ব্যবহার করবেন। ত্বকে কিছু ব্যবহার করার আগে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যদি পরামর্শ করে নেবেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS