তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন করা কঠিন। তবে বিভিন্ন ওষুধ বা ব্যয়বহুল ক্রিম প্যাক ব্যবহার না করাই ভালো। তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন সম্পর্কে বিউটি কনসাল্টেন্ট পন্নি খান কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। চলুন জেনে নেই-
মুখ ধোয়া
দিনে ন্যূনতম দুইবার তৈলাক্ত মুখ ধোয়া উচিত। বেশি ক্ষারীয় সাবান এড়িয়ে চলুন। এরচেয়ে মৃদু সাবান যেমন গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করুন।
মধু
মধু জীবাণু প্রতিরোধ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ব্রণ এবং তৈলাক্ত ত্বকে সরাসরি মুখের ওপর মধু মাখুন। প্রায় ১০ মিনিট অপেক্ষা করে, মধু শুকিয়ে গেলে উষ্ণ পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
ডিমের সাদা অংশ এবং লেবু
লেবু এবং অন্যান্য সাইট্রাস ফল তেল শোষণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, লেবুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ক্ষমতাও আছে। ডিম লেবুর প্যাক বানাতে ১টি ডিমের সাদা অংশে ১চা চামচ লেবু রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন। তবে যাদের ডিমে এলার্জি আছে, তাদের জন্য এই প্রক্রিয়াটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
কাজুবাদাম
কাজুবাদামের গুড়ো ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার বা এক্সফলিয়েট করে। এটি অতিরিক্ত তেল শুষে নিতেও সাহায্য করে। বাদামের স্ক্রাব তৈরি করতে ৩চা চামচ গুড়ো করা কাঁচা বাদামে ২ টেবিল চামচ কাঁচা মধু মিশিয়ে নিন। স্ক্রাবটি আপনার মুখে আস্তে আস্তে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয় বৃত্তাকারভাবে প্রয়োগ করুন। এটি শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন। তবে বাদামে এলার্জি থাকলে এটি ব্যবহার করা যাবে না।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে। রাতে ঘুমানোর আগে আপনার মুখে পাতলাভাবে ঘৃতকুমারী প্রয়োগ করুন এবং সকাল পর্যন্ত রেখে দিন। তবে আপনার ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল হলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করবেন না। আপনি যদি আগে অ্যালোভেরা ব্যবহার না করে থাকেন, তবে আপনার হাতে অল্প পরিমাণ মেখে নিন। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে যদি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না যায়, তবে আপনি নিশ্চিন্তে অ্যালোভেরা] ব্যবহার করতে পারেন।
টমেটো
ত্বকে অতিরিক্ত তেল এবং ত্বকের ছিদ্রগুলোতে ময়লা জমে বন্ধ হয়ে গেলে সেগুলো পরিষ্কার করতে টমেটো সাহায্য করে। টমেটো দিয়ে একটি এক্সফলিয়েটিং মাস্ক তৈরি করতে ১টি টমেটোর রসের সঙ্গে ১ চা চামচ চিনি মিশান। এরপর গালের ওপর বৃত্তাকারভাবে ম্যাসেজ করুন এবং ৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন। মাস্কটি শুকিয়ে গেলে উষ্ণ পানিতে খুব ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন।
ব্লটিং পেপার
ব্লটিং পেপার হলো পাতলা কাগজের মতো যা আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। আপনার ত্বকের তৈলাক্তভাব যখনই আপনাকে অস্বস্তি দেবে, তখনই অথবা সারাদিন প্রয়োজনমতো ব্যবহার করুন ব্লটিং পেপার।
কসমেটিক ক্লে বা কাদামাটি
কসমেটিক ক্লে ত্বকের তেল শোষণ করতে ব্যবহৃত হয়। ফরাসি সবুজ কাদামাটি তৈলাক্ত ত্বক এবং ব্রণের জন্য বেশ উপকারী। কসমেটিক ক্লে দিয়ে মাস্ক তৈরি করতে চাইলে–প্রায় এক চা চামচ মাটিতে ফিল্টারের পানি বা গোলাপজল মিশাতে থাকুন যতক্ষণ না এটি মাখা মাখা বা পুডিংয়ের মতো হয়। আপনার মুখে এই মিশ্রণটি লাগান এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রেখে দিন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে কাদামাটি ধুয়ে ফেলুন।
ওটস
ওটমিল ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ এবং এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করে। মুখে ওটমিল ব্যবহার করতে, ১/২ কাপ গুড়ো করা ওটস গরম পানিতে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রনটিতে নেড়ে নেড়ে ১ টেবিল চামচ মধু দিন। প্রায় তিন মিনিট ধরে এই ওটমিলের মিশ্রণটি আপনার মুখে ম্যাসাজ করুন। এরপর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং মুখ শুকিয়ে নিন। মাঝে মাঝে আপনি এটি ১০-১৫ মিনিটও রেখে দিতে পারেন।
জোজোবা তেল
জোজোবা তেল দিয়ে তৈরি মাস্ক সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করলে ত্বকের হালকা ব্রণগুলো কমে আসে। তবে এটি খুব বেশি ব্যবহার করলে তৈলাক্ত ত্বকে হিতে বিপরীত হতে পারে।