পাবনায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাবনা বাস টার্মিনাল এলাকায় পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্য ও ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সকাল থেকে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাবনা- ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে বিকেল ৩টার দিকে পাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে বাসটার্মিনাল গোল চত্বরের দিকে এগিয়ে আসেন। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে তা অতিক্রম করে শহরের দিকে প্রবেশ করতে চান তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পাল্টা টিয়ারশেল ও গুলি বর্ষণ করেন। এসময় পুরা বাসটার্মিনাল এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এদিকে শহরের সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ এলাকায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পালটাধাওয়া ঘটনায় ঘটে।
এ সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ধাওয়া দিলে তারা বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ডিগ্রি বটতলা এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ফেলে যাওয়া বেশ কিছু মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা ১১টার দিকে পুরো শহর ও মহাসড়ক দখল করে ব্যাপক শোডাউন দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ডিগ্রি বটতলা মোড়ে ও বিকেল ৩টায় পাবনা বাসটার্মিনাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে বিক্ষোভ চলাকালে স্বল্পসংখ্যাক পুলিশ, বিজিবি ও ডিবি পুলিশের উপস্থিত থাকলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীরা শহর ছেড়ে টার্মিনালের দিকে চলে গেলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। বর্তমান পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘটনার বিষয়ে পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। সকাল থেকে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একটি গ্রুপ শহরে অন্য একটি গ্রুপ মহসড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছিলাম। কিন্তু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে আসা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ শহরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেয়া হয়। বাধা ভেঙে তারা লাঠি নিয়ে যাওয়া সময় পুলিশের ওপরে হামলা করে ইটপাটকেল ছুড়েন। এ সময় বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তখন টিয়ারশেল, রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে এ পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত রয়েছে পুলিশের ওপরে হামলা করেছে। তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।