কোলেস্টেরল থেকে যত দিন দূরে থাকা যায়, ততই ভালো। কারণ, কোলেস্টেরলের হাত ধরে শরীরে হানা দেয় হৃদরোগ।কিন্তু কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ নয়। কেবল খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানলে এই রোগের হাত থেকে নিস্তার নেই, মুঠো মুঠো ওষুধ খেয়ে রোগ শুধু বশে রাখা যায় মাত্র। কোলেস্টেরলের হাত থেকে যদি নিস্তার পেতে হয়, তা হলে রোজের অভ্যাসেও আনতে হবে কিছু বদল। সবচেয়ে ভালো হয় নিয়ম মেনে শরীরচর্চা করলে। জেনে নিন কী কী ব্যায়াম করলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
* হাঁটাহাঁটি করুন
জিমে যেতে আলস্য লাগলে হাঁটুন। রোজ ঘড়ি ধরে ২০ মিনিট হাঁটলেই সুফল পাবেন। গরম, বৃষ্টিতে বাইরে যাওয়ার দরকারও নেই। বরং বাড়ির ভেতরেই হাঁটুন। অফিস গেলে সেখানেও হাঁটুন। যদি কেনাকাটা করতে যান, সেখানেও ধপ করে বসে না পড়ে বরং হাঁটাহাঁটি করুন না, ক্ষতি কী! ট্রেড মিলেই যে হাঁটতে হবে তেমনটা নয়। ভোর বেলায় বাড়ির ছাদে হাঁটতে পারেন। অথবা বাড়ির সামনের রাস্তায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট মতো হেঁটে নিন। তাতেও উপকার হবে।
* দৌড়নো অভ্যাস করুন
আলস্য ঝেড়ে ফেলে দৌড়তে হবে। চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রতিদিন নিয়ম মেনে হাঁটাও যেমন খুবই উপকারী, তেমনই দিনে সময় বার করে যদি মিনিট দশেক দৌড়নো যায়, তা হলে সারা শরীরের ব্যায়াম হয়। শুরুতেই গতি বাড়িয়ে হুড়মুড়িয়ে দৌড়তে শুরু করবেন না। ধীরে শুরু করুন। তার পর সময় নিয়ে গতি বাড়ান। দৌড়নোর সময় শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার ব্যাপারটা খুব জরুরি। পা ফেলার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শ্বাস নিন এবং শ্বাস ছাড়ুন। প্রথমে ১০ মিনিট দৌড়নো অভ্যাস করুন। তার পর সময় বাড়িয়ে ২০ মিনিট দৌড়ান। হাঁফিয়ে গেলে বিশ্রাম নিন। ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যাবে।
* নিয়মিত সাইক্লিং
সাইকেল চালানো খুব ভাল শরীরচর্চা। চিকিৎসকেরাই পরামর্শ দেন, সাইকেল চালালে শুধু শরীর নয়, মনও ভাল থাকে। সারা শরীরের ব্যায়াম হয়। নিয়মিত সাইকেল চালালে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদরোগের আশঙ্কা কমে। রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়। পেশির গঠনও মজবুত হয় সাইকেল চালালে। যদি মানসিক সমস্যা জাঁকিয়ে বসে, অতিরিক্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগতে থাকেন, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সাইকেল চালানো শুরু করে দিন। দেখবেন অল্প দিনেই উপকার পাচ্ছেন।
* ইয়োগা করুন রোজ
নিয়ম করে যোগাসন করলে শুধু কোলেস্টেরলই নয়, আরও বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ থেকেও রেহাই পাবেন। কোলেস্টেরল কমানোর খুব ব্যায়াম হলো সর্বাঙ্গাসন। চিত হয়ে শুয়ে পা দুটি জোড়া করে ওপরে তুলুন। এ বার দুই হাতের তালুতে কোমরের ভার দিয়ে পিঠ এমন ভাবে ঠেলে তুলুন, যেন ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত এক সরলেরখায় থাকে। থুতনিটি বুকের সঙ্গে লেগে থাকবে। দৃষ্টি থাকবে পায়ের আঙুলের দিকে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে। ৩০ সেকেন্ড এ ভাবে থেকে শবাসনে বিশ্রাম নিন। তিন বার অভ্যাস করুন এই ব্যায়াম।
* নিয়ম জেনে সাঁতার কাটুন
সাঁতারে শরীরের একাধিক পেশি একসঙ্গে কাজ করে। যেকোনো ব্যথা, যন্ত্রণায় আরাম দিতে পারে সাঁতার। রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমে। তবে সঠিক নিয়ম জেনে সাঁতার কাটুন।