জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের আবাসিক কোয়ার্টারে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বলায় পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মচারীকে ১৫-২০ মিনিট খুঁটিতে বেঁধে রাখার ঘটনা ঘটেছে। মো. ইকবাল হোসেন নামে ওই লাইন টেকনিশিয়ানের অভিযোগ, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের নির্দেশেই তাকে বেঁধে রাখেন সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।
গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটির প্রতিবাদে শুক্রবার (২১ জুন) জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সামনে মানববন্ধন করেছেন পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীরা। যদিও এ ঘটনায় ইকবালের বিরুদ্ধেই একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীরা জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরের আবাসিক কোয়ার্টার বেলী-১, হাসনা হেনা-১ ও আনসার ব্যারাকের বিদ্যুৎ বিল গত দুই বছর যাবত বকেয়া। পল্লী বিদ্যুতের দেওয়ানগঞ্জ জোনাল অফিসের এজিএম মো. শেখ ফরিদের নির্দেশে লাইন টেকনিশিয়ান মো. ইকবাল হোসেন ও লাইন টু লেবেল-১ শাহজামাল ইয়াছিন বকেয়া বিলের জন্যে দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে যান। সেখানে খোঁজাখুঁজি করে দায়িত্বশীল কাউকে না পেয়ে তারা এজিএম শেখ ফরিদকে জানান। তিনি তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন। ওই দুজন তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্তের কথা জানান সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের। তখন আনসার সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান।
ইকবাল হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশেই আমি ও লাইনম্যান শাহজামাল ইয়াছিন আনসার ব্যারাকে যাই। সেখানে কর্তব্যরত আনসারদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা বললে তারা ইউএনও স্যারকে কল দেন। পরে ইউএনও স্যার আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তিনি শুধু জানতে চান যে আমি কার নির্দেশে ওখানে গিয়েছি। এর উত্তর দেওয়ার পরেই আনসার সদস্যদের মোবাইল ফোনটি দিয়ে দেই। এরপরই ব্যারাকের আনসার সদস্যরা আমাকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর তারাই আমাকে ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম মো. শেখ ফরিদ বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডিসি সাহেব বিষয়টি সমঝোতার জন্য রোববার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। তাই আমরা আপাতত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি না।
এসব বিষয়ে জানতে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শফিউর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাদের সাড়া মেলেনি।
এদিকে ঘটনাটির পর দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারী মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন আনসার সদস্য খাইরুল ইসলাম।