পৃথিবীটা আজ ছোট ছোট হতে হতে, হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোনেই বন্দি হয়ে গিয়েছে। তাই তো এই যন্ত্র ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত শান্ত থাকতে পারি না।
মনটা আনচান করে। কিছু একটা না থাকার অনুভূতি গ্রাস করে হৃদয়কে। আর আমাদের এহেন স্মার্টফোন প্রীতিই কিন্তু দেহ-মনের বারোটা বাজানোর কাজে সিদ্ধহস্ত।
বিশেষত, রাত জেগে মোবাইলে ওয়েব সিরিজ, ফেসবুকে চোখ রাখলে যে আগামীদিনে বড়সড় সমস্যার ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে, তা তো বলাই বাহুল্য! তাই আর সময় নষ্ট না করে রাতে দীর্ঘসময় ধরে মোবাইলে চোখ রাখার একাধিক ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে বিশদে জেনে নিন।
আশা করছি, এই প্রতিবেদনটি পড়ার পর আপনার চোখ খুলে যাবে। আপনিও অচিরেই নিজের ভুল শুধরে নেবেন। আর তাতেই ফিরবে আপনার শরীর ও মনের হাল।
ঘুমের সমস্যা
আমাদের মস্তিষ্ক থেকে মেলাটোনিন নামক একটি হরমোন নির্গত হয়। আর এই হরমোনই ঘুম আনার কাজটি একা হাতে সামলায়। এমনকি ঘুমের চক্রকেও নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন। তবে মুশকিল হলো, আপনি যদি বেশি রাত পর্যন্ত মোবাইলে চোখ রাখেন, তাহলে ব্রেনে মেলাটোনিন ক্ষরণে সমস্যা হতে পারে। আর মস্তিষ্কে এই হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রায় কোনো তারতম্য ঘটলে যে অচিরেই ঘুমের বাজবে বারোটা, তা তো বলাই বাহুল্য! তাই শান্তিতে ঘুমানোর ইচ্ছে থাকলে রাতে মোবাইল ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন।
চোখের সমস্যা
স্মার্টফোন থেকে বেরিয়ে আসা আলোর ওয়েভলেনথ খুব ছোট। আর সেই কারণেই বেশিক্ষণ মোবাইলের দিকে চেয়ে থাকলে চোখের বারোটা বাজার আশঙ্কা বাড়ে। বিশেষত, রাতে মোবাইল ঘাঁটলে চোখের ওপর চাপ পড়ে বেশি। এমনকি এই যন্ত্র থেকে নির্গত হওয়া নীল আলোর কারসাজিতে রেটিনার ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই চোখের খেয়াল রাখতে চাইলে রাতে স্মার্টফোন দেখার ভুলটা এবার শুধরে নিন।
মন খারাপ
রাতে স্মার্টফোন দেখলে শুধু শরীর নয়, মনের ওপরও একাধিক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জানলে অবাক হবেন, এই যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা নীল আলোর প্রভাবে পিছু নিতে পারে অবসাদের মতো জটিল মানসিক সমস্যা। এমনকি সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মন খারাপ হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে চলে যাওয়া সম্ভব। তাই এসব বিপদের ফাঁদে এড়াতে এখনই সচেতন হোন।
ক্যানসারের ফাঁদ
আমাদের প্রাণের স্মার্টফোন থেকে প্রতি মুহূর্তে বেরিয়ে আসে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন। তাই দীর্ঘসময় ঘরে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই ভুলটা করলে শরীরের ওপর রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। ফলে ক্যানসারের মতো জটিল অসুখের ফাঁদে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ে বৈকি। তাই কর্কটরোগের মতো জটিল অসুখের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে চাইলে ভোর পর্যন্ত মোবাইল ব্যবহারের ভুলটা শুধরে নিন। তাতেই স্বাস্থ্যের হাল ফিরবে।
দুর্বল হতে পারে স্মৃতিশক্তি
গবেষণায় দেখা যায়, স্মার্টফোন সরাসরি মস্তিষ্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। রাতে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহারের কারণে আলগা হতে পারে স্মৃতির বাঁধন। তাই স্মৃতিভ্রমের ফাঁদ এড়াতে চাইলে যতটা সম্ভব মোবাইলের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। এই নিয়মটা মেনে চললেই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়বে বৈকি!