প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাস এলেই চাহিদা বেড়ে যায় বেগুনের। একই সঙ্গে বাড়ে দামও।এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রমজানের আগে ও শুরুতে রাজধানীর বাজারগুলোতে আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হয়েছে এই সবজিটি। তবে সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতে বেগুনি তৈরির এই উপকরণটির দাম কমতে শুরু করেছে।
বুধবার (২০ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও পশ্চিম রাজাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি সবুজ গোল বেগুন মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবুজ বোতল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে। এছাড়া কালো তাল বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা ও কালো লম্বা বেগুন ৫০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
যদিও এসব বাজারের পাইকারি দোকান ও রাস্তায় বিভিন্ন ভ্যানে মানভেদে বিভিন্ন জাতের বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অথচ রমজানের শুরুতে রাজধানীর বাজারগুলোতে বিভিন্ন জাতের বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
বেগুনের দাম কমার বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জাকির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রমজানের আগে ও শুরুতে বেগুনের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তখন চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় দাম বেশি ছিল। এখন চাহিদা কমেছে, একইসঙ্গে বেগুনের দামও কমেছে। রমজান মাস শেষ হবে, দামও তত কমবে।
এদিকে আজকে বগুড়ায় পাইকারিতে আড়াই টাকা থেকে পাঁচ টাকায় বেগুন বিক্রি হয়েছে। তারপরও ঢাকায় বেগুনের এত দাম কেন জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, যেসব এলাকায় বেগুনের চাষ হয়, সেখানে দামও কম হবে এটাই স্বাভাবিক। সেখানে বাছাই করে বেগুন বিক্রি হয় না। সব গড়পতায় বিক্রি হয়। সেগুলো ঢাকায় আসার পর বাছাই করে ভালো, কম ভালো ও খারাপ বেগুন আলাদা করা হয়। আমরা যেসব বেগুন বিক্রি করি সেগুলো ভালো। কারওয়ান বাজারই খারাপ বেগুন ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া এসব বেগুনে পরিবহন খরচ ও লেবার খরচ থাকে। এর কারণে ঢাকার বাইরের থেকে ঢাকায় দাম বেশি থাকে।
একই কথা বলেন পশ্চিম রাজাবাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মনির।
তিনি বলেন, বেগুন কেনার পর পরিবহন খরচ, লেবার খরচ যুক্ত হয়। এর কারণে ঢাকায় আসতে আসতে দাম বেড়ে যায়। তবে বেগুনের দাম এখন পড়তির দিকে। এটি আরও কমবে।
বেগুনের দাম কমা শুরু হলেও, এতে সন্তুষ্ট নন ক্রেতারা। তাদের মতে, এই সময় বেগুনের দাম ৩০-৪০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়।
আশরাফুল নামের এক ক্রেতা বলেন, বেগুনের দাম ৩০-৪০ টাকা হলে ভালো হত। কিন্তু মাত্রও ৬০ টাকা দিয়ে বেগুন কিনেছি। এটা সাধারণ ক্রেতাদের ওপর জুলুম।
পিয়াস নামের আরেক ক্রেতা বলেন, আমরা বেশি দামে বেগুন কিনলেও, খোঁজ নিলে দেখা যাবে কৃষক দাম পাচ্ছে না। তাহলে টাকাটা যায় কার পকেটে। বিক্রেতারাও বলেন তারা বেশি দামে বেগুন কিনে এনেছেন। এই বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।