ইফতারের আগে মেট্রোরেলে যাত্রীদের চাপ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিকেল ৩টা বাজলেই মতিঝিলের ব্যাংকপাড়া, প্রধান প্রশাসনিক দপ্তর সচিবালয় এবং শাহবাগ ও কারওরান বাজারের মেট্রোস্টেশনগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়।অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ইফতারের আগে মেট্রোতে যাত্রীদের চাপ দ্বিগুণেরও বেশি।
বুধবার (২০ মার্চ) বিকেলে এসব মেট্রোস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন স্টেশন ছাড়িয়ে চলে গেছে নিচের ফুটপাতে। যাত্রী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্টেশনের নিরাপত্তাকর্মীরা।
মতিঝিল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অফিস ফেরত মানুষজনের লাইন টিকিট কাউন্টার থেকে নিচে একদিকে শাপলা চত্বরের দিকে রূপালী ব্যাংক শাখার গেট, অন্যদিকে পশ্চিমে পূবালী ব্যাংকের গেট পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই দীর্ঘ লাইনে সর্পিল গতিতে মেট্রোস্টেশনের দিকে এগোচ্ছেন। মানুষের অতিরিক্ত চাপে স্টেশনের দ্বিতীয় তলার গেটে যান্ত্রিক চেকিং মেশিনও সঠিকভাবে কাজ করছে না।
একই অবস্থা দেখা গেছে সচিবালয়, শাহবাগ ও কারওয়ান বাজার স্টেশনে। তিনটি স্টেশনেই অফিস ফেরত মানুষের লম্বা লাইন স্টেশনের সিঁড়ি ছাড়িয়ে চলে গেছে নিচে। স্টেশনগুলোতে মেট্রোরেল আসার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। সবার মধ্যেই ইফতারের আগে বাসায় ফেরার তাড়া।
মতিঝিল, সচিবালয়, কারওয়ান বাজারের অফিসফেরত মানুষেরা আগে ব্যক্তিগত গাড়ি, স্টাফ গাড়ি বা গণপরিবহন ব্যবহার করে বাসায় ফিরতেন। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে বেশির ভাগ মানুষ মেট্রোরেলে চলাফেরা করছেন। রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে বিকেল তিনটা থেকে দুই-আড়াই ঘণ্টা মেট্রো স্টেশনগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রাফিজা আক্তার বলেন, অন্যদিন হলে এত ভিড়ে না গিয়ে পরের মেট্রোতে যেতাম। রোজা আছি, বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে একসাথে ইফতার করব। এজন্য তাড়াহুড়া করে উঠছি। অন্যদিন ভিড় থাকলেও রোজার মধ্যে বেশি ভিড় হচ্ছে। আমার মতো সবাই ইফতারের আগে বাসায় যেতে চায়। এজন্য একটু কষ্ট করে হলেও মেট্রোতে উঠতে হবে।
মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে আর স্টাফগাড়ি ব্যবহার করছেন না বলে জানান রাফিজা আক্তার।
সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, সময়মতো পৌঁছে দেওয়ার নির্ভরযোগ্য যানবাহন হচ্ছে মেট্রোরেল। এ কারণে একটু ভিড় ঠেলে হলেও মেট্রোতে উঠছি, ইফতারের আগে সময়মতো বাসায় পৌঁছে দেবে।
মতিঝিল থেকে ছেড়ে আসার পর সচিবালয় স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় আরও বেড়ে যায়। মেট্রোতে ওঠার জন্য যাত্রীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়। শাহবাগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। যাত্রী নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খান মেট্রোর কর্মীরা। মাইকে বার বার যাত্রীদের সতর্ক করতে হয়। কোনো কোনো স্টেশনে যাত্রীর চাপে দরজার বন্ধ করতে দেরি হওয়ার কারণে সময়মতো স্টেশন ছাড়াও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকে শেওড়াপাড়া পর্যন্ত।