বেইলি রোড ট্র্যাজেডিতে ভোক্তার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। একজন গ্রাহক রেস্টুরেন্টে যাওয়ার আগে তার পক্ষে জানা সম্ভব হয় না ওই স্থাপনা বিল্ডিং কোড মেনে করা হয়েছে কি না।সেখানে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ও জরুরি নির্গমন সিঁড়িসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা সঠিক আছে কি না বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান।
শনিবার (২ মার্চ) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসের প্রাক্কালে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান বলেন , সঠিক সময়ে আমদানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণে আজ প্রয়োজন ভোক্তার সিন্ডিকেট। ভোক্তারা সমন্বিতভাবে কোনো দ্রব্য কেনা কমিয়ে দিলে এক সপ্তাহ পরেই তার দাম কমে আসবে, যেমন গরুর মাংস।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ১ মার্চ থেকে ভোজ্য তেল লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে ১৬৩ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলে সে দামে বিক্রি হচ্ছে না। তাই রূপগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ ৭টি রিফাইনারিতে তেলের উৎপাদন ও মজুদ পর্যবেক্ষণের জন্য ভোক্তা অধিকারের টিম গেছে। দাম কমানোর সিদ্ধান্ত সহজে কার্যকর হয় না, অথচ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর হয়। চারটি পণ্যের ট্যাক্স কমালেও বাজারে তার প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দুষ্টচক্রের কারণে ন্যায্য দামে পণ্য কিনতে না পারায় ভোক্তারা কষ্টে আছে। সিন্ডিকেটের কবল থেকে বের হতে পারছে না ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংস, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুরসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য। আসন্ন রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে কিনা তা ভাবিয়ে তুলছে ভোক্তাদের। তবে ভ্যাট ট্যাক্স সহনীয় রেখে উন্মুক্ত আমদানি, ডলার সংকট মোকাবিলা, ব্যাংকগুলোকে বাড়তি দামে ডলার বিক্রি না করা, পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ সর্বোপরি সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙে দিতে পারলে ভোক্তারা সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারবে। এজন্য ভোক্তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়েস রেইজ করতে হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্ব নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক জাকির হোসেন, সাংবাদিক উম্মান নাহার আজমী, সাংবাদিক মো. আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক ম. আতিকুর রহমান।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।