আমার নাজমুল চলে গেল

আমার নাজমুল চলে গেল

গতকাল আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে বাসা থেকে বের হলো। এরপর আর ফিরলো না।আমার নাজমুল চলে গেল। আমার নাজমুল চলে গেল। ‘

শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনে আহজারি করতে করতে এসব কথা বলছিলেন নাজমুল হাসানের মা হাসিনা বেগম।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ডের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান। পরিবারের দাবি, নাজমুল ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের নিয়ে গতকাল খেতে গিয়েছিল।

নাজমুলের পরিবার জানায়, নাজমুল হাসান চার বন্ধু মিলে বেইলি রোডের ওই ভবনের তিন তলায় একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় নাজমুল ও তার এক বন্ধু নিহত হয়েছেন। তাদের এক বন্ধু বেঁচে ফিরেছেন। তিনিই নাজমুলের মৃত্যুর খবর দিয়েছেন।

দুই বন্ধুর মরদেহ পাওয়া গেলেও নাজমুলের এখনো কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার। তারা ঢামেকে ছেলের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছেন।

ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনে নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলামকে কান্নাজড়িত কন্ঠে সন্তানের মরদেহ খুঁজে দেওয়ার আকুতি জানাতে দেখা যায়। তিনি বলেন,  অগ্নিকাণ্ডের কিছুক্ষণ আগে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে যান নাজমুলের এক বন্ধু। তিনিই পরেই বাকি বন্ধুদের পরিবারকে অগ্নিকাণ্ডের খবর জানান।

নাজমুলের মামা আনোয়ার হোসেন গাজী বলেন, ‘নাজমুল অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। আইডিয়াল স্কুল ও ঢাকা কলেজ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিল। ভার্সিটি শেষ করে বিদেশে পাঠানোর স্বপ্ন ছিল দুলাভাইয়ের (নাজমুলের বাবা)। সব পুড়ে শেষ হয়ে গেল। সবার কাছে অনুরোধ আমাদের একটু সহায়তা করেন। আমরা যেন আমাদের ছেলের মরদেহ খুঁজে পাই।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বেইলি রোডের একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে৷ ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত প্রায় পৌনে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জন মারা গেছে এবং ঢামেকে ২ জন ও শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ জন চিকিৎসাধীন। চিকিৎসাধীন কেউই শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS