ডান্ডাবেড়ি পরাতে কারা অধিদপ্তরে জারি করা পরিপত্র মেনে চলতে বলেছেন হাইকোর্ট।
শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, দুর্ধর্ষ প্রকৃতির বন্দি ছাড়া গণহারে বন্দি আসামিদের ডান্ডাবেড়ি না পরাতে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
পটুয়াখালীতে বাবার জানাজায় এক ছাত্রদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আনার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল মৃধাকে ডান্ডাবেড়ি পরানো কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শকসহ আট বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিম পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে থেকে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাজমুলকে আটক করে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। কিছু দিন পর তার বাবার মৃত্যুর খবর আসে। পরে আইনজীবীর মাধ্যমে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জানাজায় অংশ নিতে ১৩ জানুয়ারি দুপুরে তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। জানাজার সময় হাতকড়া খুলে দিলেও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখে পুলিশ। জানাজা শেষে তাকে আবার পটুয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
পরের দিন ১৪ জানুয়ারি এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক। ‘বাবার জানাজায় ডাণ্ডাবেড়ি পায়ে ছাত্রদলের নেতা’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চান আইনজীবী কায়সার কামাল। পরে ডান্ডাবেড়ি পরানো চ্যালেঞ্জ করে নাজমুল মৃধা হাইকোর্টে রিট করেন।
ডান্ডাবেড়ি পরানো নিয়ে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর কারা অধিদপ্তরের মহাপিরচালকের পক্ষে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক এক পরিপত্র জারি করেন।
সেখানে বলা হয়, ‘এখন থেকে কারাগারে আটক বিশেষ প্রকৃতির বন্দি, যেমন— শীর্ষ সন্ত্রাসী, দুর্ধর্ষ, জঙ্গি (জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, হিযবুত তাহরীর, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম, আনসার আল-ইসলাম ইত্যাদি) বন্দিদের আদালতে হাজিরা বা অন্যত্র স্থানান্তরের সময় আনা-নেওয়ার পথে ডান্ডাবেড়ি পরানোসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো। ’
শুনানিতে আদেশের আগে আদালত বলেন, ‘ডান্ডাবেড়ি পরানোর বিষয়ে শুধু রুল দিলে হবে না।
এ বিষয়ে আমরা একটি গাইডলাইন (নীতিমালা বা নির্দেশিকা) করে দেবো। রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করতে হবে।