দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মোহাম্মদ সাদিক বিজয়ী হয়েছেন। তিনি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান। সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ১১২টি কেন্দ্রে মোট ৯০ হাজার ৫৯০ ভোট পেয়েছেন তিনি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ পেয়েছেন ৩১ হাজার ৭২১ ভোট।
বিজয়ী হওয়ার পর আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি চাকরিপ্রার্থীদের পাশে থাকবেন। মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘আমি চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কাজ করেছি, তাঁরা আমাকে তাঁদের পাশে পাবেন। আমার দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে তরুণদের চাকরি ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে যা বলেছে ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা বাস্তবায়নের যে বিপুল কর্মযজ্ঞ, তাতে আমি যুক্ত থাকব।
যেসব ইতিবাচক ব্যবস্থা নিলে চাকরিপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন, তা আমি বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। এটা আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। সংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে বিস্তারিত আর কিছু বলছি না। সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আমার বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরব।’
মোহাম্মদ সাদিক চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় পিএসসিতে তিনি নানা ইতিবাচক কাজের জন্য দারুণ ভাবে প্রশংসিত হন। নন–ক্যাডার থেকে বিপুলসংখ্যক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তরুণেরা তাঁকে বেকারবান্ধব চেয়ারম্যান হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
মোহাম্মদ সাদিকের জন্ম ১৯৫৫ সালে।
সুনামগঞ্জ শহরতলির ধারারগাঁও গ্রামে। তিনি বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিএ ও এমএ ডিগ্রি ছাড়াও সিলেটের নাগরী লিপির ওপর গবেষণার জন্য ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। সিভিল সার্ভিসের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে মোহাম্মদ সাদিক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শিক্ষাসচিব ও নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর সরকার সাদিককে কর্ম কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরে ২০১৬ সালের মে থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাংবিধানিক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন সাদিক। এ সময় তিনি পরীক্ষাপদ্ধতির নানা সংস্কারের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন ও চাকরিপ্রার্থী তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। মোহাম্মদ সাদিকের সহধর্মিণী জেসমিন আরা বেগম অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ।
মোহাম্মদ সাদিক একজন কবি ও গবেষক হিসেবেও সমাদৃত। ২০১৭ সালে কবিতায় পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। এ ছাড়া জাতীয় কবিতা পরিষদ, এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও আজীবন সদস্য হিসেবে সম্পৃক্ততা রয়েছে তাঁর।