সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোশ ভুচেভিচ পদত্যাগ করেছেন। রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ভেঙের পড়ার ভয়াবহ ঘটনায় দেশব্যাপী বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করলেন।খবর বিবিসির।
মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভুচেভিচ বলেন, পরিস্থিতি যেন আরও জটিল না হয়ে ওঠে এবং দেশে যেন আর উত্তেজনা না বাড়ে, সে জন্যই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত নভেম্বরে সার্বিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর নোভি সাদে এক রেল স্টেশনের কংক্রিটের ছাদ ভেঙে পড়লে অন্তত ১৫ জনের প্রাণ যায়। এর জেরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে।
তখন থেকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় অবস্থান নেন। তারা ছাদ ভেঙে পড়ার জবাবদিহিতা দাবি করেন। স্টেশনের নির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্পে দুর্নীতি ও দেখভালের অভাব ছিল, এমন অভিযোগ এনে তারা বিক্ষোভে নামেন।
নোভি সাদের ওই স্টেশনের ছাদ ভেঙে পড়ার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে সাবেক পরিবহনমন্ত্রী গোরান ভেসিকসহ কয়েক ডজন লোক অভিযুক্ত হয়েছেন। পরিবহনমন্ত্রী ওই ঘটনার পরপরই পদত্যাগ করেন।
সার্বিয়ার সাম্প্রতিক এই আন্দোলনে ছাত্ররা নেতৃত্ব দেন। তারা প্রতিদিন ট্রাফিক বন্ধ রাখেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অচল করে দেন। গত ডিসেম্বরে প্রায় এক লাখ নাগরিক বেলগ্রেডের এক বিক্ষোভে অংশ নেন।
গত শুক্রবার সাধারণ ধর্মঘটের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বহু সার্বিয়ান কাজ থেকে বিরত ছিলেন। সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডের সবচেয়ে ব্যস্ত সড়কে ২৪ ঘণ্টার অবরোধ চলাকালে সরকারপন্থী সমর্থক ও বিরোধী দলের মধ্যে সংঘর্ষে এক নারী শিক্ষার্থী আহত হন। এতে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
পরে সন্ধ্যায় সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিস বলেন, তিনি আন্দোলনে নানা ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ক্ষমা করবেন। সরকারে বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি আশা করেন, মন্ত্রিপরিষদের অর্ধেকেরও বেশি সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
মিলোশ ভুচেভিচ সার্বিয়ার ক্ষমতাসীন প্রোগ্রেসিভ পার্টির নেতা। এক বছরেরও কম সময় ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদে ছিলেন। তিনি এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি নোভি সাদ শহরের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।