যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোনে কথা বলেছেন। সোমবার (২৮ জানুয়ারি) দুই নেতার মধ্যে এ ফোনালাপ হয়।এদিন ফোনালাপের পর এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। তারা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপসহ আঞ্চলিক অনেক বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।
গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প বেশ কিছু অভিবাসন-সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী রয়েছেন।
সোমবারের ফোনালাপ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আলোচনায় প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হোয়াইট হাউসের বিবৃতি অনুযায়ী, ট্রাম্প ভারতের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বেশি কেনার ওপর জোর দিয়েছেন এবং দুই দেশের মধ্যে ‘ন্যায্য’ বাণিজ্য সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
ফোনালাপ নিয়ে এক্স (আগের টুইটার) হ্যান্ডলে মোদি ট্রাম্পকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে উল্লেখ করে লেখেন, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। আমরা পারস্পরিক লাভবানযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য অংশীদারত্বে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আমাদের জনগণের কল্যাণ এবং বৈশ্বিক শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার দিকে একসঙ্গে কাজ করব।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত নাগরিকদের শনাক্ত করে দেশে ফিরিয়ে নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ভারত। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সহযোগিতা করতে এবং বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে এই পদক্ষেপ নয়াদিল্লির প্রাথমিক সংকেত।
প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে শনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ জন্য ভারত তাদের পরিচয় যাচাই করে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
পরিচয় প্রকাশ না করে তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ভারতীয়দের সংখ্যা ১৮ হাজারের অনেক বেশি হতে পারে। কারণ, এটি স্পষ্ট নয় যে কতজন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পশ্চিম ভারতের, বিশেষ করে পাঞ্জাব ও গুজরাট রাজ্যের।
অন্যান্য অনেক দেশের মতো ভারতও ট্রাম্প প্রশাসনকে সন্তুষ্ট করতে এবং তার বাণিজ্য হুমকির প্রভাব এড়াতে পর্দার আড়ালে কাজ করছে। অবৈধ অভিবাসন দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি ছিল।