মালদ্বীপের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস আরেনায় নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।তবে সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে আশা ছিল প্রত্যাবর্তনের। এই মাঠে একাধিকবার প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
আজ তেমনটা করতে পারেননি তপু-মিতুলরা। মালদ্বীপের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। আগামী ১৬ নভেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে দুই দল। এই ম্যাচের শুরু থেকেই মালদ্বীপের বিপক্ষে আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচে একাধিক সুযোগ পেলেও তা গোলে রূপান্তরিত করতে পারেনি লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
খেলার পঞ্চম মিনিটে বা দিক দিয়ে কর্নারের কাছ থেকে উড়িয়ে মারেন ঈসা ফয়সাল। বক্সে থাকা মোরছালিনের হেডে বল যায় বক্সের অনেকটা উপর দিয়ে। ওই মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে রাকিবের পা ঘুরে বল যায় হৃদয়ের কাছে। জটলার মধ্যে অবশ্য গোল আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশ।
অষ্টম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে বক্সে বল পেয়ে যান ফাহিম। তবে রাকিবের কাছে ভুল কাটব্যাকে বল ক্লিয়ার করেন মালদ্বীপের ডিফেন্ডাররা। ১২ মিনিটে মিতুলের বাড়ানো বলে তপুর ভুলের খেসারত দিতে বসেছিল বাংলাদেশ। মালদ্বীপের নেইজ হাসান ক্রস দেন বক্সে। যদিও শেষ মুহূর্তে কোনো বিপদ হতে দেননি ঈসা।
১৫ মিনিটে ফাহিমের নেওয়া কর্নার কিক থেকে হেড নেন রাকিব। তবে অনেকটা ফাকায় থেকেও বল গোলে রাখতে পারেনি এই ফরোয়ার্ড। তবে তিনি মিনিট পর ভুল করেনি মালদ্বীপ। বক্সের সামনে ডান কোনা থেকে হামজার ফ্রি কিক থেকে হেডে বলে জাল জড়ান আলি ফাসির। গোলপোস্টে থাকা কিছুই করার ছিল না মিতুলের। ১-০ গোলে লিড নেয় অতিথিরা। প্রতি আক্রমণ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছিল সমতায় ফেরার সুযোগ। তবে ফাহিমের ক্রস রাকিব পাওয়ার আগেই ক্লিয়ার করে মালদ্বীপ। খানিক বাদে সেটপিস থেকে সোহেল রানার জোড়ালো শট যায় বক্সের ওপর দিয়ে।
৩০ মিনিটে দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। কর্নারের বাম প্রান্ত থেকে ফাহিমের পাসে বক্সের সামনে থেকে গোলে শট রাখতে পারেননি রাকিব। তার বা পায়ের গতিময় শট বক্সের বাইরে দিয়ে বা পাস কাঁপায়। ৩৪ মিনিটে একটুর জন্য আবারও গোল মিস করে বাংলাদেশ। বক্সে রাকিবের শট প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের শরীরের লেগে বাইরে চলে যায়।
বিরতির এক মিনিট আগে গোলবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। কর্নারের পর অনেকটা দূরে থাকা থাকা সোহেল ফাকায পেয়ে যান বল। এরপর তার নেওয়া জোড়ালো শট ফিরে আসে বারে লেগে। এই অর্ধে আর গোল পরিশোধ করতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিরতির পর আক্রমণ প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। ৫৩ মিনিটে অবশ্য দারুণ সুযোগ পায় মালদ্বীপ। তবে মিতুল মারমার দুর্দান্ত সেভে গোল হজম করতে হয় বাংলাদেশকে। ৬২ মিনিটে নিশ্চিত গোল থেকে বাংলাদেশকে বাঁচান রাকিব। ৬৪ মিনিটে তিন পরিবর্তন আনেন কোচ কাবেররা। শাহরিয়ার ইমন, চন্দন রয় আর মজিবুর রহমান জনি নামেন বদলি হিসেবে। ৭০ মিনিটে ইমনের হেডে বল যায় বক্স ঘেষে।
৭৫ মিনিটে এই ম্যাচে প্রথমবারের মতো অন টার্গেটে শট নেয় বাংলাদেশ। বদলি হিসেবে নামা জনির শট অবশ্য ঠেকিয়ে দেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক হোসেন শারিফ। গোলবঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। ৭৮ মিনিটে মোরছালিনের দুর্বল শট আতঙ্ক ছড়াতে পারেনি মালদ্বীপের গোলে। ম্যাচের বয়স বেড়েছে বাংলাদেশের চন্নছাড়া ফুটবলের প্রদর্শনীই যেন বাড়ছিল।
৮৪ মিনিটে বক্সে বল পেয়ে আকাশে উড়িযে মারেন মোরছালিন। পুরো ম্যাচেই এদিন নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটেই আরেকিটি মিস করেন মোরছালিন। মূলত মালদ্বীপের গোলরক্ষক হোসেন শারিফ বা দিকে ঝাপিয়ে দুর্দান্ত সেভ করেন তিনি। এই অর্র্ধে তিনটি সেভ করেন তিনি। মাঝ মাঠ থেকে কে বক্সের ডান দিক দিয়ে প্রায় একাই বল নিয়ে উপরে ওঠেন রাকিব। বক্সে ঢুকে ক্রস দেন মোরছালিনকে। যদিও দারুণ সুযোগ থেকে আরও একবার হতাশ করেন তিনি।
খেলার শেষ মিনিটে আরও একবার বাংলাদেশকে হতাশ করেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। মাঝ মাঠ থেকে আক্রমণের সুর বেধে দেন জনি। বল নিয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে এগিয়ে যান রাকিব। সেটা দেখেই সামনে এগিয়ে আসেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। রাকিব বলে শট নেওয়ার আগেই তাকে আটকে দেন আজকের ম্যাচে অন্তত চারটি সেভ করা শারিফ।
যোগ করা সময়ের তিনি মিনিটের মাথায় মোরছালিনের নেওয়া কর্নার থেকে থেকে গোলে শট নেন রাকিব। তবে সেটি যায বক্সের বা পাস ঘেষে। যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে মোরছালিনের ক্রসে শট নিতে পারেননি কেউ।
বছরের শেষ দিকে এসে খেলা প্রথম ম্যাচেই জয় পেলো মালদ্বীপ।