জেলার শিবচরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মা ও ছেলেকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
আহতাবস্থায় আছুরা বেগম (৪৩) ও তার ছেলে সাজ্জাদ মাতুব্বর (২২) শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শিবচর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে জেলার শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের চরকামারকান্দি গ্রামে মৃত আনোয়ার মাতুব্বরের স্ত্রী আছুরা বেগম ও ছেলে সাজ্জাদ মাতুব্বরকে ঘর থেকে বের করে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে প্রতিবেশী রশিদ মাতুব্বর ও তার লোকজন। গত সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
শিবচর থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমি-জমা নিয়ে অনেকদিন আগে থেকেই রশিদ মাতুব্বরের সঙ্গে আছুরা বেগমদের বিরোধ চলছিল। গত সোমবার রাতে জরুরি কথা বলে বলে ঘরের দরজা খুলতে বলে। পরে দরজা খুললেই অতর্কিতভাবে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। ঘর থেকে বের করে নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে শিবচর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এলাকাবাসী জানায়, এমনভাবে মা ও ছেলেকে নির্যাতন করা হয়েছে, সেটা আগে কেউ কোনোদিন দেখেনি। এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় রশিদ মাতুব্বর ও তার ছেলে অসহায় পরিবারটির ওপর এমন নির্যাতন করার সাহস পেয়েছে। এর কঠিন বিচার হলে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পাবে না।
আহত সাজ্জাদ মাতুব্বর বলেন, আমাদের জমি নিয়ে আট বছর ধরে রশিদ মাতুব্বরের সঙ্গে ঝামেলা চলছে। আমরা আদালতে মামলা করেছি। মামলা করার কারণে গত সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে আমাদের ওপর হামলা হয় এবং গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ২১ অক্টোবর রাতে আমরা ঘরে শুয়ে পড়েছিলাম। জরুরি কথা আছে বলে আমার দাদিকে দিয়ে আমাদের ডেকে ওঠানো হয়। দরজা খুলতেই ১০-১২ জন লোক লোহার রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। টেনে-হিঁচড়ে আমাকে, ছোট ভাইকে ও মাকে বের করে পিটাতে থাকে। পরে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। আমাকে হত্যার উদ্দেশে মুখের মধ্যে কাপড় ঢুকিয়ে দেয়। কিন্তু আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে নিলখী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, ওরা একই বাড়ির লোকজন। বাড়ির জায়গা নিয়ে অনেক দিনের বিরোধ। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর আগে একাধিকবার তাদের নিয়ে বসাও হয়েছিল। এদিকে গত ২১ অক্টোবর রাতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। আমি এলাকায় নেই এখন। বাড়িতে এসে বিষয়টির খোঁজ নেব।
এদিকে ঘটনার পর অভিযুক্ত রশিদ মাতুব্বরসহ অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতার হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টাও করা হয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব নয়। দ্রুত মামলা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।