বাংলাদেশকে একটু আশা জুগিয়েছিল তৃতীয় দিনের শেষটা। এরপর যত সময় গড়িয়েছে, তারা কেবল গেছে এগিয়েই।লিটন দাসের সেঞ্চুরির পর পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসে ধ্সিয়ে দিয়েছেন হাসান মাহমুদ। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশ শুরু করেছে ইতিবাচকভাবে, আছে জয়ের পথেই।
রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করে ২৬২ রান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান, বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫ রান।
চা বিরতি অবধি কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৭ রান করেছে সফরকারীরা। এরপর শেষ সেশন আর মাঠে গড়াতে পারেনি আলোক স্বল্পতা আর বৃষ্টিতে। আগামীকালও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে রাউয়ালপিন্ডিতে। জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার আর ১৪৩ রান, পাকিস্তানের ১০ উইকেট।
আগের দিন খুররাম শেহজাদ আউট হলে খেলা শেষ হয়ে যায়। এরপর চতুর্থ দিনের শুরুতে সায়েম আইয়ুবের সঙ্গী হন শান মাসুদ। দিনের নবম ওভারে তাদের জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। ড্রাইভ করতে গেলে মিড অফে তার দারুণ ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৫ বলে ২০ রান করে ফেরেন আইয়ুব।
টানা ছয় ওভার করার পর তাসকিনকে সরিয়ে আনা হয় নাহিদ রানাকে। এই পেসার দুর্দান্ত এক স্পেলই করেন। টানা তিন ওভারে উইকেট পান। শুরুটা হয় পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদকে দিয়ে।
গুড লেংথের বল বেরিয়ে যাওয়ার সময় ড্রাইভ করতে যান শান মাসুদ, কিন্তু বল ব্যাট ছুঁয়ে যায় উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। ৩৪ বলে ২৮ রান করেন তিনি। পরের ওভারে এসে বাবর আজমও আউট হন। ১৮ বলে ১১ রান করার পর স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
পরের বলেই আরও একটি উইকেট পেয়ে যেতে পারতেন নাহিদ। কিন্তু মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই রিজওয়ানের তুলে দেওয়া ক্যাচ বাঁ দিকে সরে নিতে পারেননি সাদমান। এরপরও অবশ্য উইকেট পেয়েছেন নাহিদ।
১০ বলে ২ রান করা সৌদ শাকিল নাহিদের বলেই ক্যাচ দেন উইকেটরক্ষক লিটনের হাতে। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে অবশ্য বাংলাদেশকে ভুগতে হয়েছে রিজওয়ানের ক্যাচ ছাড়ার জন্য। তিনি ছুটছিলেন হাফ সেঞ্চুরির পথে, তাকে ভালো সঙ্গ দিচ্ছিলেন আগা সালমানও।
ওখান থেকে বাংলাদেশের পথ বদলে দেন হাসান মাহমুদ। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর নিজের করা প্রথম বলেই তিনি ফেরান ৭৩ বলে ৪৩ রান করা মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। এরপরের বলে মোহাম্মদ আলীও স্লিপে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে।
১৩৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। তবুও বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তি হয়ে থাকেন আগা সালমান। তাকে শেষ অবধি আর আউট করতে পারেনি তারা। ৭১ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তবে তাতে বাংলাদেশের খুব বড় ক্ষতি হয়নি।
আরেক প্রান্তে থাকা ব্যাটারদের ঠিকই ফিরিয়ে দিতে পেরেছেন বোলাররা। আবরার আহমেদকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট পান নাহিদ রানা। পরে কিছুক্ষণ হাসান মাহমুদ ও নাহিদের মধ্যে চলে পাঁচ উইকেট নিতে পারার প্রতিযোগীতা। তাতে সফল হয়েছেন হাসানই।
তার বলে স্লিপে মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে ক্যাচ দেন মীর হামজা। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে পাকিস্তানের মাটিতে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন হাসান। বাকি পাঁচ উইকেটের চারটি নিয়েছেন নাহিদ, একটি তাসকিন। অর্থাৎ দশটি উইকেটই নিয়েছেন পেসাররা। টেস্টে এর আগে এমন কীর্তি ছিল না বাংলাদেশি পেসারদের।
ব্যাটিংয়ে নেমে ইতিবাচক শুরু করেন জাকির হাসান। চা বিরতির আগের ছয় ওভারে বাংলাদেশ তুলে ৩৭ রান, জাকির ছক্কা হাঁকান দুটি। এক ছক্কা ও দুই চারে ২১ বলে ২৭ রান করেছেন জাকির। সাদমানের রান ১৫ বলে ৮। শেষ সেশনে তারা আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি তারা।