৭ বিয়ে করে আলোচনায় এসেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার রবিজুল ইসলাম। প্রায় ১ বছর ধরে ৭ স্ত্রীকে নিয়ে একই বাড়িতে সুখের সংসার করে আসছিলেন তিনি। সেই রবিজুলের দুই স্ত্রীকে জোরপূর্বক তার বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে।
শনিবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন রবিউল ও তার দুই স্ত্রী।
রবিজুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাটিকাবাড়ি গ্রামের মিয়াপাড়ার আয়নাল মন্ডলের ছেলে।
রবিজুল ইসলাম বলেন, আমি সাতটি বিয়ে করেছি। ৬ নম্বর বউ জুই ৪ মাস আগে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছে। বাকি ৬ বউকে নিয়ে আমি সুখে-শান্তিতে বসবাস করছিলাম। আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। বউরা সুন্দরভাবে সংসার করছে। কিন্তু আজ সকাল ৮টায় গ্রামের মাতব্বররা পাটিকাবাড়ি বাজারে আমাদের ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। এরপর তারা জোর করে দলিলে আমাদের সই নেন। ২ স্ত্রীকে ২ লাখ করে ৪ লাখ টাকার চেক দিতে বাধ্য করেন। তারা আমার বাড়ি থেকে ৫ নম্বর বউ বানু আক্তার ও ৭ নম্বর বউ মিতা আক্তারকে জোরপূর্বক বের করে দেন।
লিটন, আমিন, রহিম, শাহজাহানসহ স্থানীয় মাতব্বরদের দাবি- এত বউ নিয়ে সংসার করা যাবে না। এজন্য তারা আমার ২ বউকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। তারা তাদের বাবার বাড়িতে উঠেছে। বউদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনলে তারা আমার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয়। গ্রামের মাতব্বররা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেছে। আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে রবিজুলের স্ত্রী বানু ও মিতা বলেন, গ্রামের মাতব্বররা স্বামীর বাড়ি থেকে আমাদের বের করে দিয়েছে। স্বামীর বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। গ্রামের মাতব্বররা জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে দলিলে সই নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। স্বামীর ঘরে আমরা সুখে-শান্তিতে ছিলাম। স্বামীর ঘরে ফিরতে চাই, সুন্দরভাবে সংসার করতে চাই। যারা আমাদের সঙ্গে অন্যায় কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব, থানায় মামলা করবো।
এ বিষয়ে পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান কানু, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মতিউর রহমান ও মাতব্বরদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
পাটিকাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সফর উদ্দীন বলেন, রবিজুল ৭টি বিয়ে করেছে এবং ৭ স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করে আসছিল। কয়েকমাস আগে এক স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়। ইসলামে চারজনের বেশি স্ত্রী নিয়ে সংসার করা হারাম। এজন্য ৬ স্ত্রীর মধ্যে ২ স্ত্রীকে তার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে গ্রামের মণ্ডলরা। ৪ স্ত্রী নিয়ে সংসার করলে এলাকার মানুষের কোনো সমস্যা নেই। সে ৪ স্ত্রীকে নিয়ে ধর্ম মেনে সংসার করুক।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আলিয়া মাদরাসার সাবেক উপাধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হালিম শরিফ বলেন, পবিত্র কোরআনে পরিষ্কারভাবে বলা আছে যে, একজন সচ্ছল পুরুষ একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪ জন স্ত্রী রাখতে পারবেন। এর বেশি স্ত্রী রাখা হারাম।
রবিজুলের স্ত্রীরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হালসা গ্রামের রুবিনা খাতুন, গোস্বামী দুর্গাপুর এলাকার মিতা আক্তার, কিশোরগঞ্জের হেলেনা খাতুন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নুরুন নাহার, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার স্বপ্না, একই উপজেলার ডম্বলপুর এলাকার বানু আক্তার এবং কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকার রিতা আক্তার জুই। জুই চার মাস আগে ডিভোর্স দিয়ে চলে গেছেন।