নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত সাংবাদিক কামাল হায়দার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (৪ জুন) রাতে ঢাকায় নিজ বাসভবনে তার মৃত্যু হয়।
বুধবার (৫ জুন) দুপুর ৩টায় নিজ গ্রাম নরসিংদীর শিবপুর বৈলাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অর্নারের পর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয় রাজনিতিবিদ,সুশীল সমাজের মানুষসহ সর্বস্তরের মানুষ সাবেক এ এমপির জানাজায় অংশ নেন। দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ছিলেন সাবেক এমপি কামাল হায়দার।
সাবেক এ নেতা নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের বৈলাব গ্রামের সম্ভ্রন্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । ১৯৮৬ সালে শিবপুর থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তার বাবার নাম মরহুম ইদ্রিস আলী মাস্টার। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অর্নারে উপস্থিত ছিলেন শিবপুরের সহকারী কমিনার (ভূমি) মাহামুদুল হাসান রাসেল।
জনাজায় উপস্থিত ছিলেন, মাছিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রবীন রাজনিতিবিধ আবুল হারিছ রিকাবদার কালা মিয়া, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সামসুল ইসলাম মোল্লা, জুনায়দুল হক জুনু, শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহসিন নাজির, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম রাখিল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, মান্নান ভূইয়া পরিষদের সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম মৃধা, শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বি খান, শিবপুর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মাহাবুবুল ইসলাম তাজুল, মরহুমের ছেলে সিটি গ্রুপের সিনিয়র ডিরেক্টর তানভীর হায়দার পাভেল।
জানা যায়, কামাল হায়দারের মতো একজন রাজনৈতিক নেতার জন্ম হয়েছিল সুষ্ঠু ধারার রাজনীতির জন্য। শিবপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় ছাত্র ইউনিয়ন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয় তিনি। পরবর্তীতে ন্যাপ মোজাফ্ফরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন কামাল হায়দার। তিন জোটের রাজনৈতিক লিয়াজো কমিটির অন্যতম সংগঠন ছিলেন তিনি। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় ড. কামাল হোসেনের বাসা থেকে ৮০ নেতা গ্রেপ্তার হয়। কাজী জাফর এরশাদ সরকারের মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেয়েও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
কামাল হায়দার ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়ন সমন্বয়ে গঠিত গেরিলা বাহিনীর ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। অথচ শিবপুরে রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা থেকে তার নাম বাতিল করা হয়। একসময় তিনি সাংবাদিকতা পেশা বেছে নিয়েছিলেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে অর্নাস ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশের সিনিয়র রাজনীতিবিদ, তোফায়েল আহমেদ, আমির আমু, রাশেদ খান মেননের মতো ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণে অনেক সময় আলোচনার টেবিলে কামাল হায়দারের নাম স্থান পায়। বর্তমানে তার ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। ছেলে তানভীর হায়দার পাভেল সিটি গ্রুপের সিনিয়র ডিরেক্টর, ছেলের বউ ডাক্তার, মেয়ে সুপ্তি হায়দার ব্রিটিশ কাউন্সিলে চাকরি করেন।