ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিলেও ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে ইফতার পার্টি করেছে বিএনপি। পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েও ভারত সংশ্লিষ্টতা বয়কট করতে পারেনি তারা। ইফতার পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উপস্থিত ছিলেন না দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
অনেকদিন ধরে দেশের একটি জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে। আর তাতে সমর্থন বয়কটের ডাক দেয় বিএনপি। তাদের মতে, দেশকে স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে ভারত। সেই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে ২০ মার্চ ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দেন রুহুল কবির রিজভী।
এর আগে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে’ পাশে থাকতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান, দলের নীতি নির্ধারক ‘স্থায়ী কমিটি’-র সদস্য আব্দুল মঈন খান। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে ভারতকে পাশে পাওয়া গিয়েছিল, ‘গণতন্ত্রের লড়াই’-য়েও ভারতের সেই ভূমিকা চান মঈন খান।
এদিকে (২৪ মার্চ) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে কূটনীতিকদের সম্মানে বিএনপি’র ইফতার অনুষ্ঠিত হয়। ইফতারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান তখন জানান, ইফতারে জাতিসংঘ, এনডিআই, আইআরআই এবং ৩৮টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন ল্যাফেইব, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নার্দির সিম্পসন, জার্মান অ্যাম্বাসেডর আখিম ট্রোসটার, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ প্রমুখ। এছাড়াও ভারতের হাইকমিশনের আরও কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র ভারত বয়কট প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কদিন আগে ওদের নেতা ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন, ভারতে চিকিৎসা নিতে যাবেন, আবার আপনারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিবেন-এগুলো হিপোক্রেসি (ভণ্ডামি) ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। বিএনপির আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে বাজার অস্থিতিশীল করে পণ্যের মূল্য বাড়ানো।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ভারতের ভারতের গরুর মাংস দিয়ে সেহরি খায়, পেঁয়াজ দিয়ে পেঁয়াজু খায়, ভারতের শাড়ি পরে স্ত্রীরা সাজে, কিন্তু বয়কটের ডাক দেয়। ভারতীয় পণ্য বয়কটের নামে মানুষের সঙ্গে তামাশা করছে তারা। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা করছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চিরাচরিত পাকিস্তানি কায়দায় ভারতের বিরোধিতা শুরু করেছে বিএনপি। তারা যখন কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না পায়, তখনই এই একটা ইস্যু সামনে নিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধুর আমলেও করেছে, এখন শেখ হাসিনার আমলেও তাই করছে।