চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশে ৫০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫৫ জন নিহত হয়েছেন এবং এক হাজার ৩১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। বুধবার (২০ মার্চ) সংগঠনটির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই সময়ে ১৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২১০ জন নিহত, ১২৯ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ, নিহতের ৩৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও আহতের ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১১৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৫ জন নিহত ও ৩১৭ জন আহত হয়েছেন, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ২৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৬৩ জন চালক, ৩৪ জন পথচারী, ৪৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৯ জন শিক্ষার্থী, ছয় জন শিক্ষক, ৯৩ জন নারী, ৫৮ জন শিশু, তিন জন সাংবাদিক, এক জন চিকিৎসক, এক জন আইনজীবী, এক জন মুক্তিযোদ্ধা, এবং পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে তিন জন পুলিশ সদস্য, এক আনসার, দুই সাংবাদিক, এক জন চিকিৎসক, এক জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ১২৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৩৪ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৩৪ জন শিক্ষার্থী, ১৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ছয় জন শিক্ষক, ও পাঁচ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৭১০টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে।
এতে দেখা যায়, ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ বাস, ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ বিবিধ কারনে, চাকায় ওড়না পেছিয়ে শূন্য দশমিক ৩৯ শতাংশ, এবং ১ দশমিক ৩৯ ট্রোন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
এছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।