মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ এবং তার বক্তব্যে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের গুরুত্বকেই তুলে ধরে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলে, বাংলাদেশে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে সমালোচনামুখর ছিল বহির্বিশ্বের একটা অংশ। তারপরও আজ এ সংকটে সিকিউরিটির মতো সেনসেটিভ ইস্যুতে (প্রধানমন্ত্রীকে) আমন্ত্রণ জানানো এবং গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে (তার) অংশ নেওয়া বাংলাদেশের গুরুত্বকেই তুলে ধরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে যুদ্ধের বিরুদ্ধে, শান্তির পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। সবচেয়ে বেশি জোরালো বক্তব্য, স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা, যা আগে কোনো নেতা এ সাহস দেখাতে পারেননি। এখানে শেখ হাসিনার সাহসী কূটনীতিই আমরা দেখলাম।
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও সার্বভৌমত্বে আওয়ামী লীগ আঘাত করেছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো বিবেকবান রাজনীতিবিদ এ কথা বলতে পারেন না। এটি হলো পাগলের অসংলগ্ন প্রলাপ। বিএনপির রাজনীতিতে মিথ্যাচার চিরজীবনই। তাদের রাজনীতিতে মিথ্যাচার অপরিহার্য বিষয়। এটি তাদের চিরাচরিত মিথ্যাচারের ধারাবাহিকতা।
দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার – বিএনপির এমন অভিযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিরোধী দলের এখন আর কিছু নেই। জনগণ নেই, তাদের কর্মীরাও নেই। এখন কিছু না কিছু তো জনগণ ও কর্মীদের সামনে বলতে হবে। এ জন্য কথামালার চাতুরী তারা করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, আবার কিছু কিছু পণ্যের দাম কমতির দিকে। বাজার ওঠানামা চিরদিনই আছে। বিশ্ব প্রতিক্রিয়ায় দ্রব্যমূল্য বাড়ছে বলে সরকার এখানে কোনো উদাসীনতা দেখায়নি। সরকার সক্রিয় আছে, সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে নেই। যা করণীয়, অবশ্যই তা করছি।
মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, সীমান্ত রক্ষায় বাংলাদেশ সদা জাগ্রত। মিয়ানমারে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, তাতে সীমান্তে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি থাকতে পারে, হতে পারে। কাজেই এ বিষয়ে আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের প্রস্তুতি আছে।
গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে জাতীয় পার্টিকে ভাঙা হচ্ছে, বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দল গঠন করেছে, এর বাইরে যারা জাতীয় পার্টির নামে কোনো একটি ভাগ সৃষ্টি করছে, সেটি তাদের নিজেদের বিষয়। এতে জাতীয় সংসদে থাকা জাতীয় পার্টির কেউ নেই। জাতীয় সংসদে যারা বিরোধী দল, তারা সংসদ সদস্য। এর বাইরে যারা করছেন, তারা কেউ সংসদ সদস্য নন। কাজেই এ নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানো কিংবা উদ্বেগের কিছু নেই।
ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণ রোধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বন ও পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন। এরইমধ্যে তিনি কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইটের ভাটা বন্ধ করা একটি বড় কাজ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।