কেন পাতে লবণ খাবেন না?

কেন পাতে লবণ খাবেন না?

নুনের (লবণ) মতো ভালোবাসার গল্প তো আমরা সবাই শুনেছি ছোটবেলায়। আর লবণেই আসল স্বাদ আর ভালোবাসা এটাই মেনেছি।নুনের মতো ভালোবাসা খুবই ভালো, তবে নুনের জন্য বেশি ভালোবাসা কিন্তু আমাদের জন্য ভালো নয়। আমাদের অনেকেরই খাবারের সঙ্গে বাড়তি লবণ খাওয়ার অভ্যাস আছে। খেতে বসে আগে লবণদানিটি টেবিলে আছে কি না এটা নিশ্চিত হন অনেকে। কিন্তু এটির কারণে অনেক বেশি ক্ষতি হচ্ছে আমাদের কিডনি ও লিভারের।

পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, কিডনি অতিরিক্ত সোডিয়াম আমাদের দেহ থেকে নিষ্কাশন করতে পারে না। ফলে বাড়তি লবণের সোডিয়ামটুকু রয়ে যায় কিডনিতেই। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কিডনি। এমনকি কিডনি ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আর লবণের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে আমাদের শরীরের তরলের। বেশি লবণ লিভারের কাজেও চাপ তৈরি করে। এজন্য লিভারে কোনো সমস্যা হলেও লবণ খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত লবণ খেলে কখনো কখনো হাত-পায়ে পানি জমে ফোলা ফোলা ভাব দেখা দেয়। উচ্চ মাত্রার সোডিয়ামের কারণেই এটি হয়। এমন হওয়াটা কিডনি এবং উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। অতিরিক্ত লবণ সবার জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশুদের এজন্য এটি অনেক বেশি ক্ষতি করে।  

তামান্না চৌধুরী বলেন, শিশুদের কিডনি কর্মক্ষম হতে জন্মের পরেও চার মাস সময় লাগে। তাই শিশুদের খাবারে কোনোভাবেই যেন লবণ বেশি না হয়। এই বাড়তি লবণ শরীরে জমে শিশুর কিডনি, লিভার এবং মস্কিষ্কের ক্ষতি হতে পারে, হতে পারে মৃত্যুও।  শরীরে লবণের পরিমাণ বেশি হলে অতিরিক্ত পানি শরীরে জমে যায়। বেরোতে পারে না। এই অতিরিক্ত পানি ধরে রাখার মাধ্যমে লবণ উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে, যা ক্ষতিকর। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ও ব্রেইন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। এছাড়াও পাকস্থলীর ঘা এবং কোলন ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে বাড়তি লবণ।

তবে লবণ আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনও। শরীরের অভ্যন্তরীণ কাজ ঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য লবণের সোডিয়াম অংশটি অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এটি মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণেই যত বিপত্তি হতে পারে। টিনজাত স্যুপ, সবজি, মাংস-মাছ, প্রক্রিয়াজাত পনির ও মাংস, হিমায়িত খাবার, বিভিন্ন ধরনের সস, শুঁটকি মাছে লবণের পরিমাণ বেশি থাকে। এগুলো পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।  

একজন সুস্থ প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন এক চা চামচ পরিমাণ লবণ খেতে পারবেন বলে জানান ওই পুষ্টিবিদ।

এই লবণ তৈরি খাবারের মধ্যে থাকতে হবে কোনোভাবেই পাতে বাড়তি লবণ নয়।  

এছাড়া আচারে প্রচুর লবণ থাকে তাই পরিমিত খাবেন। সস, চানাচুর, মুড়ি, পিৎজা, ইনস্ট্যান্ট নুডুলস, বার্গার, চিপসে প্রচুর লবণ থাকে। সম্ভব হলে খাবারের টেবিলে আলাদা লবণদানি রাখবেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
এএটি

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS