পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধানমন্ডির বাসায় থাকেন প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র। শরীরে নানান রোগশোক জেঁকে বসেছে, হাঁটাচলা করতে পারেন না। কার্যত ঘরবন্দী অবস্থায় দিন কাটছে তাঁর। গতকাল ৮২ বছর পূর্ণ করে ৮৩ বছরে পা দিলেন প্রবীর মিত্র, পরিবারের সদস্যরা তাঁকে নিয়ে কেক কেটে ঘরোয়া আয়োজনে দিনটি উদ্যাপন করেছেন।
প্রবীর মিত্রের পুত্রবধূ সোনিয়া ইসলাম আজ দুপুরে প্রথম আলোকে জানান, তাঁর শারীরিক অবস্থা আগের মতোই, হাঁটাচলা করতে পারেননি। হাঁটুতে একটা অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল, তবে বয়সের কারণে চিকিৎসকেরা সেই অস্ত্রোপচারে সায় দেননি।
পরিবারের সদস্যদের বাইরে চলচ্চিত্র অঙ্গনের কেউ শুভেচ্ছা জানাতে বাসায় গিয়েছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে সোনিয়া ইসলাম জানান, নাহ্। কেউ আসেনি। গত বছর প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রবীর মিত্র আক্ষেপ করে বলেছিলেন, কেউ এখন আর তাঁর খোঁজ নেয় না।
প্রবীর মিত্রের তিন ছেলে ও এক মেয়ে—মিঠুন মিত্র, ফেরদৌস পারভীন, সিফাত ইসলাম ও সামিউল ইসলাম। এর মধ্যে সামিউল মারা গেছেন। প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র প্রয়াত হয়েছেন ২০০০ সালে।
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তাঁর পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন। স্কুলজীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রথম প্রবীর মিত্র ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। যদিও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি।
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এরপর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও তিনি পেয়েছেন দর্শকপ্রিয়তা। ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’সহ চার শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।