এ বছর ডেঙ্গু পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। দেখা গেছে, একই সঙ্গে ডেঙ্গুর একাধিক ধরনেও আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলেও এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। ইতোমধ্যে দেশের ৬০ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়েছে। এবার ডেঙ্গুতে বিপুলসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিরোধে কার্যকর গুরুত্ব না দেওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিদরা।
রোববার (৯ জুলাই) সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়। এ সময় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হন আরও ৮৩৬ ডেঙ্গু রোগী; যা চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮৩৬ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫১৬ জন ও ঢাকার বাইরে ৩২০ জন।
বর্তমানে সারাদেশে ২ হাজার ৭৫০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৯৬৮ জন ও ঢাকার বাইরে ৭৮২ জন। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ বছর সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৯৫৪। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ জনে।
কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশা জরিপে প্রায় সারাদেশেই এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাই, ডেঙ্গু এখন সারাদেশের সমস্যা। যেহেতু ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, তাই আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে এর সংক্রমণ বহুগুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সাধারণত বছরের জুলাই মাসের শেষে বা আগস্টের শুরু থেকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরু থেকেই এ পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ঢাকা শহরের ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা বেশি।
২০১৯ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই বছরের আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৩৮।
আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গুর ধরন চারটি- ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। বর্তমানে ডেঙ্গুর দুটি ধরনে দেশের মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
দেশে ৬০ জেলার মধ্যে এখন পর্যন্ত যে চারটি জেলা ডেঙ্গুমুক্ত তা হচ্ছে- গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথম ডেঙ্গু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে ২০০০ সালে। এরপর থেকে প্রতিবছরই মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন।