অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনিই প্রথম কোনো বাংলাদেশি, যিনি এ পদে নিয়োগ পেলেন। তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক এ সংস্থার ‘সেক্টরস ও থিম’–বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত এডিবির পর্ষদ বৈঠকে তাঁকে এ পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
আজই নিজেদের ওয়েবসাইটে ফাতিমা ইয়াসমিনের নিয়োগের তথ্য উল্লেখ করেছে এডিবি। সংস্থাটি বলেছে, তারা আশাবাদী যে ফাতিমা ইয়াসমিন আগামী আগস্টের শেষের দিকে এডিবিতে যোগ দেবেন।
১৯৬৬ সালে এডিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এর সদস্যসংখ্যা ৬৮। সংস্থাটিতে আরও পাঁচজন ভাইস প্রেসিডেন্ট রয়েছেন।
বলা হয়েছে, এডিবির নতুন অপারেটিং মডেলের আওতায় নবগঠিত সেক্টর গ্রুপ, জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই উন্নয়ন বিভাগের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবেন ফাতিমা ইয়াসমিন। আগামী শুক্রবার, অর্থাৎ ৩০ জুন নতুন অপারেটিং মডেলের আওতায় এডিবির খাত ও থিমেটিক দক্ষতা একীভূত করার কাজের উদ্বোধন হবে।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সরকারি খাত ও রাজস্ব নীতি সংস্কার এবং সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাণিজ্য, দারিদ্র্য বিমোচনসহ ৩২ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে ফাতিমা ইয়াসমিনের।
ফাতিমা ইয়াসমিন অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট থেকেও তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির রাটগার্স ইউনিভার্সিটিতে হিউবার্ট হামফ্রে ফেলোশিপ কর্মসূচির অধীন পাবলিক পলিসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসে ফেলোশিপ পেয়েছিলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এডিবির এই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিযোগিতা হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে আবেদন জমা পড়ে। এমনকি বাংলাদেশের আরেকজন সচিবও এই পদের জন্য আবেদন করেছিলেন।
২০২২ সালের ১৭ জুলাই দেশের প্রথম নারী অর্থসচিব হিসেবে যোগ দেন ১৯৯১ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়া ফাতিমা ইয়াসমিন। দেশের প্রথম নারী ইআরডি সচিবও ছিলেন তিনি। বিসিএস নবম ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মচারী ফাতিমা ইয়াসমিন ইআরডি সচিব হওয়ার আগে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
ফাতিমা ইয়াসমিন যে এডিবিতে আবেদন করেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তা নিয়ে আলোচনা করতেন প্রায়ই। তাঁর চলে যাওয়ার পর অর্থসচিব কে হচ্ছেন, সেই আলোচনাও উঠে আসত। আগামী ঈদের পর সরকার এ ব্যাপারে কাজ করবে বলে সূত্রগুলো জানায়।