আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট ও ওয়ানডে একাদশ ঘোষণা, নেই বাংলাদেশের কেউ

আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট ও ওয়ানডে একাদশ ঘোষণা, নেই বাংলাদেশের কেউ

২০২৪ সালের বর্ষসেরা টেস্ট ও ওয়ানডে একাদশ ঘোষণা করেছে আইসিসি। দুই একাদশে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটার জায়গা পাননি।

টেস্ট একাদশে বাংলাদেশিদের মতো জায়গা পাননি পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ডের কেউই। দলে সর্বোচ্চ ৪ জন আছেন ইংল্যান্ডের। ভারতের ৩ জন, নিউজিল্যান্ডের ২ জন এবং অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার আছেন ১ জন করে।

ওয়ানডে একাদশে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের কোনো ক্রিকেটার। দলে আধিক্য রয়েছে শ্রীলঙ্কার। তাদের ৪ জন ক্রিকেটার রয়েছেন একাদশে। এছাড়া আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের ৩ জন করে এবং একজন রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

টেস্ট একাদশে ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে আছেন ভারতের যশস্বী জসওয়াল। গত পঞ্জিকাবর্ষে ৫৪.৭৪ গড়ে ১৪৭৮ রান করেছেন তিনি। যা তাকে বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বানিয়েছে। ওপেনিংয়ে জায়গা পাওয়া আরেক ওপেনার ইংল্যান্ডের বেন ডাকেট গত বছর ৩৭.০৬ গড়ে ১১৪৯ রান করেছেন, যা বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ।  

ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বরে আছেন কেন উইলিয়ামসন। ইনজুরি-আক্রান্ত হয়ে বছরের অনেকটা সময় মাঠে না নামতে পারলেও টেস্টে ৫৯.৫৮ গড়ে ১০১৩ রান করেছেন এই কিউই ব্যাটার। চারে জায়গা পাওয়া জো রুট ছিলেন গত বছর টেস্টে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। ৫৫.৫৭ গড়ে বছরের সর্বোচ্চ ১৫৫৬ রান করেছেন এই ইংলিশ ব্যাটার। পাঁচে আছেন তারই সতীর্থ হ্যারি ব্রুক। গত বছর ৫৫ গড়ে ১১০০ রান করেছেন ইংল্যান্ডের এই ভবিষ্যৎ ব্যাটিং সুপারস্টার।

ছয়ে নামার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কার কামিন্ডু মেন্ডিসকে। প্রায় দুই বছর পর জাতীয় দলের জার্সিতে ফেরা এই ব্যাটার গত বছর ৭৪.৯২ গড়ে ১০৪৯ রান করেছেন। দলের উইকেটকিপার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ইংল্যান্ডের জ্যামি স্মিথকে। গত বছর ৪২.৪৬ গড়ে ৬৩৭ রান করার পাশাপাশি উইকেটের পেছনে ৩২টি ডিসমিসাল করেছেন।

একাদশে অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা। গত বছর জাতীয় দলের জার্সিতে টেস্টে ২৯.২৭ গড়ে ৫২৭ রান করার পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনে ২৪.২৯ গড়ে ৪৮টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।  

টেস্ট দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট একাদশের নেতৃত্ব পেলেন তিনি। তার নেতৃত্বে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড এবং ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে সর্বশেষ সিরিজটি ঘরের মাটিতে হওয়া বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি। যেখানে ১০ বছর পর সিরিজ ঘরে তুলেছে অজিরা। বল হাতে গত বছর ২৪.০২ গড়ে ৩৭ উইকেট এবং ব্যাট হাতে ২৩.৫৩ গড়ে ৩০৬ রান করেছেন তিনি।  

বোলার হিসেবে টেস্ট একাদশে জায়গা পেয়েছেন ম্যাট হেনরি। নিউজিল্যান্ডের এই পেসার গত বছর ১৮.৫৮ গড়ে নিয়েছেন ৪৮ উইকেট। গত বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। তার সঙ্গে বোলিং বিভাগে আরও আছেন ভারতের জসপ্রিত বুমরাহ। গত বছরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। ১৪.৯২ গড়ে ৭১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২০-এর চেয়ে কম গড়ে ২০০ উইকেট নেওয়া প্রথম বোলারের তকমাও পেয়েছেন গত বছর।

আইসিসির বর্ষসেরা টেস্ট একাদশ: যশস্বী জয়ওয়াল (ভারত), বেন ডাকেট (ইংল্যান্ড), কেন উইলিয়ামসন (নিউজিল্যান্ড), জো রুট (ইংল্যান্ড), হ্যারি ব্রুক (ইংল্যান্ড), কামিন্ডু মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা), জ্যামি স্মিথ (উইকেটকিপার, ইংল্যান্ড), রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত), প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক, অস্ট্রেলিয়া), ম্যাট হেনরি (নিউজিল্যান্ড) ও জসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)।

ওয়ানডে একাদশে ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন পাকিস্তানের সাইম আইয়ুব। গত বছর ৯ ম্যাচে ৫১৫ রান করেছেন তিনি। ব্যাটিং গড় ৬৪.৩৭, স্ট্রাইক রেট ১০৫.৫৩, সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ১১৩। হাঁকিয়েছেন ৩টি সেঞ্চুরি ও ১টি ফিফটি। ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী রহমানুল্লাহ গুরবাজ। আফগানিস্তানের এই ব্যাটার গত বছর ১১ ম্যাচে ৫৩১ রান করেছেন; গড় ৪৮.২, স্ট্রাইক রেট ৮৯.৭, সর্বোচ্চ স্কোর ১২১, সেঞ্চুরি ৩টি, ফিফটি ২টি।

ব্যাটিং অর্ডারের তিনে জায়গা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার পাথুন নিশাঙ্কা। গত বছর ১২ ম্যাচ খেলে ৬৩.১ গড়ে ৬৯৪ রান করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ স্কোর ২১০, স্ট্রাইক রেট ১০৬.৪, সেঞ্চুরি ৩টি এবং ফিফটি হাঁকিয়েছেন ২টি। গত বছর ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন তিনি। তার সতীর্থ কুশল মেন্ডিসও আছেন বর্ষসেরা একাদশে। তার ব্যাট থেকে এসেছে বছরের সর্বোচ্চ ৭৪২ রান। ১৭ ম্যাচে ৫৩ গরে রান করেছেন তিনি; স্ট্রাইক রেট ৯০.৬, ১টি সেঞ্চুরিসহ আছে ৬টি ফিফটি; সর্বোচ্চ স্কোর ১৪৩।

বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশের অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন শ্রীলঙ্কার চারিথ আসালাঙ্কা। গত বছর ১৬ ম্যাচে ৫০.২ গড়ে এবং ৯৭.১ স্ট্রাইক রেটে ৬০৫ রান করেছেন তিনি; আছে ১টি সেঞ্চুরি ও ৪টি ফিফটি, সর্বোচ্চ স্কোর ১০১। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে ২ ম্যাচে ৩ উইকেটও নিয়েছেন তিনি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেরফানে রাদারফোর্ড আছেন বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে। গত বছর ৯ ম্যাচে ১০৬.২ গড়ে ৪২৫ রান করেন তিনি; স্ট্রাইক রেট ১২০.১, আছে ১টি সেঞ্চুরি ও ৪টি ফিফটি, সর্বোচ্চ স্কোর ১১৩। গত বছর তার সর্বনিম্ন স্কোর ছিল অপরাজিত ২৪ রান। টানা ৫ ম্যাচে ৫০ বা তার বেশি রানের কীর্তিো গড়েছেন তিনি।  

একাদশে অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন আফগানিস্তানের আজমতউল্লাহ ওমরজাই। গত বছর ১২ ম্যাচে ৫২.১ গড়ে ৪১৭ রান করেছেন তিনি; গড় ১০৫.৬, ১টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি আছে ৩টি ফিফটি; সর্বোচ্চ স্কোর ১৪৯। এছাড়া বল হাতে নিয়েছেন ১৭ উইকেট, সেরা বোলিং ৪/১৮।  

বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে দলে জায়গা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। গত বছর ১০ ম্যাচে ১৫.৬ গড়ে ২৬ উইকেট নিয়েছেন। সেরা বোলিং ফিগার ৭/১৯। প্রতি ম্যাচে গড়ে ২.৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। পেসার হিসেবে আছেন পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি। গত বছর ৬ ম্যাচে ১৭.৬ গড়ে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি; সেরা বোলিং ফিগার ৪/৪৭।  

বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশে পাকিস্তানের দ্বিতীয় পেসার হারিস রউফ। গত বছর ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি; গড় ২২.৪, সেরা বোলিং ফিগার ৫/২৯। দলে দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন আফগানিস্তানের তরুণ স্পিনার গজনফর। ১১ ম্যাচে ১৩.৫৭ গড়ে ২১ উইকেট পেয়েছেন তিনি। সেরা বোলিং ফিগার ৬/২৬। মাত্র ১৮ বছর বয়সী এই স্পিনার গত নভেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দেন। ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বছরের শেষ ওয়ানডেতেও নেন ৫ উইকেট।  

আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশ: সাইম আইয়ুব (পাকিস্তান), রহমানউল্লাহ গুরবাজ (আফগানিস্তান), পাতুম নিশাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা), কুশল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা, উইকেটকিপার), চারিত আসালাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা, অধিনায়ক), শেরফান রাদারফোর্ড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), আজমতউল্লাহ ওমরজাই (আফগানিস্তান), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা), শাহীন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান), হারিস রউফ (পাকিস্তান) ও আল্লাহ মোহাম্মদ গজনফার (আফগানিস্তান)।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS