ফায়ার সার্ভিসের ৭৫ জন প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় রাজধানীর হাজারীবাগে ভবনের পঞ্চম তলার গুদামে লাগা আগুন নেভাতে সক্ষম হন। আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ২৩ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।বিকালের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা দেওয়া হলেও সম্পূর্ণ নির্বাপণ করা হয় সন্ধ্যা ৭টা ১মিনিটে।
ফায়ার সার্ভিস থেকে বলা হচ্ছে, আগুন লাগা সেই সাততলা ভবন পুরোটাই বাণিজ্যিক। সেখানে অনেক গুদাম আছে। সেখানে ছিল চামড়ার পাশাপাশি, প্লাস্টিক পণ্য, কাগজসহ ও অন্যান্য গুদাম। এছাড়া ভবনে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল। ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না ভবনে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বাংলানিউজকে বলেন, হাজারীবাগের সাততলা ভবনের পাঁচ তলায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই আগুনটি ছয়তলা পর্যন্ত চলে যায়। ফায়ার সার্ভিস থেকে ১১টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণের পরে নির্বাপণের ঘোষণা দেওয়া হয়। ভবনটিতে অনেক গোডাউন আছে। শুধু চামড়ার নয়; আরো আছে প্লাস্টিক, কাগজসহ অন্যান্য গোডাউন। আগুনের সূত্রপাত তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
তিনি বলেন, আজ বন্ধের দিন ছিল, যদি অন্যকোনো কর্মের দিনে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটতো, হয়তো বা আগুনের তীব্রতা আরও বড় হতে পারতো। সড়কে মানুষজনের চাপ থাকতো, ঘটনাস্থলে গাড়ি পৌঁছাতেও দেরি হতো। ওই ভবনের নগণ্য অবস্থায় ছিল অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা। আইন অনুযায়ী ফায়ার সেফটির তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তবে আল্লাহর রহমতে হতাহতের কোনো সংবাদ নেই।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগ অথবা সিগারেটের আগুনসহ নানা রকম কারণেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে সূত্রপাতের সঠিক বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।
হাজারীবাগ থানার (ওসি তদন্ত) শাহাদাত হোসেন বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনো হতাহতের সংবাদ নাই। ভবনটি বাণিজ্যিক। সেখানে মূলত বিভিন্ন পণ্যের গুদাম ছিল।
এর আগে দুপুর ২টা ২৩ মিনিটে ভবনটির ট্যানারি গুদামে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করে ৪টা ৪৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিকেলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লে. কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা। আমাদের সক্ষমতার পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি। পানির সংকট, ভেতরে দাহ্য বস্তু, উৎসুক জনতার ভিড় ও সরু রাস্তার কারণে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা কাজে লাগানো যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ভবনে ফায়ার সেফটি প্ল্যান ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে কয়েকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। আগুন ভবনের ৫, ৬ ও ৭ তলায় ছড়িয়ে পড়েছিল।