হঠাৎ বেড়েছে পাটের দাম, সৈয়দপুরের পাটকলগুলো বন্ধের উপক্রম

হঠাৎ বেড়েছে পাটের দাম, সৈয়দপুরের পাটকলগুলো বন্ধের উপক্রম

এ মৌসুমে মণ প্রতি ২২০০ টাকার পাট ৩৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ করে পাটের দাম প্রায় দেড়গুণ বেড়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে।

ফলে এলাকার ছয়টি পাটকল এখন বন্ধের উপক্রম। অন্তর্বর্তী সরকার প্লাস্টিকের বস্তা, ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন, ব্যবহার, বেচা ও কেনা পর্যায়ক্রমে নিষিদ্ধ করছে। ফলে গ্রামীণ মজুদদাররা প্রচুর পাট গুদামজাত করতে শুরু করেছেন। এতে পাটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে বাজারে। পাটকলমালিক সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।  

উত্তরের শিল্প শহর সৈয়দপুরে রয়েছে ছয়টি পাটকল। এসবে মূলত সুতালি ও বস্তা উৎপাদন হয়ে থাকে।  সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরে অবস্থিত পোদ্দার অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী রাজকুমার পোদ্দার রাজু জানান, তাদের পাটকলটিতে প্রতিটিন ১০ মেট্রিকটন বস্তা উৎপাদন হয়ে আসছিল। বর্তমানে বাজারে পাটের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। দামও বেশি। এতে করে মিলের উৎপাদন নেমে এসেছে চার মেট্রিকটন।  

তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

তিনি বলেন, ঘোষণাটি নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী। তবে এ সুযোগে এক শ্রেণির মজুদদার কাঁচা পাট মজুদ করতে শুরু করেছেন। কারণ প্লাস্টিক বন্ধ হলে পাটের বস্তা ও ব্যাগের চাহিদা বাড়বে। আমরা আশেপাশের হাটবাজারগুলোতে দেখছি, হঠাৎ পাট উধাও হয়ে গেছে।  গ্রামীণ জনপদেই এসব পাট মজুদ করা হচ্ছে।  

ইকু জুট প্রসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুল আলম জানান, মৌসুমের শুরুতে গত জুন-জুলাই মাসে আমরা কিছু পাট কিনেছিলাম। তখন বাজার স্বাভাবিক ছিল। সে সময় প্রতিমণ পাট ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকা টাকায় কিনেছি। সেই পাটের দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫০০ থেকে ৩৬০০ টাকায়। এতে করে পাটকল চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

পাটকল সূত্র জানায়, একটি বস্তা উৎপাদনে প্রায় এক কেজি কাঁচা পাটের প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে খরচ পড়ে ১৪৫ টাকা। অথচ ওই বস্তা বাজারে বিক্রি করতে হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এটি মিল মালিকদের জন্য বিশাল ক্ষতি।  
সৈয়দপুর-রংপুর সড়কের পাশে কলাবাগানে অবস্থিত রানু অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সুশীল কুমার দাস জানান, বেশি টাকা দিয়েও পাট সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। পাটের দাম বাড়লেও মিল তো চালাতে হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের বসিয়ে রাখা যাবে না। পাট মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা পাট সম্প্রসারণ বিভাগের পাট পরিদর্শক মহিবুর রহমান লোহানি বলেন, পাট মজুদের কথা শুনেছি। এটি অপরাধ। ওপরের নির্দেশনা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS