বঙ্গোপসাগরে মা ইলিশ রক্ষায় চলছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এ সুযোগে সাগরের আন্তর্জাতিক সীমা পেরিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে ভারতীয় জেলেরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এবং মাছ ধরছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে ভারতীয় জেলেদের বাংলাদেশে অবাধে মাছ শিকার বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীদের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে জেলে ও ট্রলার মালিকরা।
জানা যায়, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশ উপকূলবর্তী এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চলের ২০০ নটিক্যাল মাইলের একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণ করা হয়। মূলত এখানেই বাংলাদেশের জেলেরা মাছ ধরার সুযোগ পায়। কিন্তু জেলে এবং ট্রলার মালিকদের অভিযোগ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সুযোগে বাংলাদেশের জলসীমায় রীতিমতো মাছ লুট করে নিয়ে যাচ্ছে ভারতের জেলেরা। রুপালি ইলিশের বিচরণের বড় ক্ষেত্রগুলো দখলে নিয়েছে তারা।
সাগরে ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে না পারলে নিষেধাজ্ঞার তেমন সুফল মিলবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভারতীয় জেলেদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বাড়ানোর দাবি ট্রলার মালিকদের।
সদর উপজেলার বাসিন্দা জেলে ইদ্রিস বাংলানিউজকে বলেন, ২২ দিন আমরা মাছ শিকারে যাচ্ছি না। তবে সরকারের কাছে দাবি চাল-ডালের সঙ্গে অল্প কিছু নগদ অর্থ দেওয়ার।
জেলে মামুন হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে ছেলে-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে একটু কষ্ট হলেও মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে মাছ শিকার বন্ধ রেখেছি। তবে বাংলাদেশ অংশে অন্য কোনো দেশের ট্রলার মাছ শিকার করতে যেন না পারে সে দিকে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ অংশে যাতে অন্য দেশের ট্রলার ঢুকতে না পারে সেজন্য নৌবাহিনী কাজ করছে। এ বিষয়ে মৎস্য বিভাগ সচেতন রয়েছে।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বাংলানিউজকে জানান, মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে সে অনুযায়ী অভিযান চলমান রয়েছে।
খুলনা নৌ অঞ্চলের (জি), এনজিপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি, বিএন এরিয়া কমান্ডার, রিয়ার অ্যাডমিরাল গোলাম সাদেক জানান, বাংলাদেশের জলসীমায় কেউ যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সে ব্যাপারে তৎপর রয়েছে নৌবাহিনী।