রাজনীতির নামে যাতে কোনো অরাজকতা, ষড়যন্ত্র করতে না পারে সে জন্য স্বাধীনতাবিরোধী, বিএনপি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান।এ সময় স্পিকার ড. শরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছে। এ ধারা আগামীতে থাকলে আগামীতেও হবে। বিএনপির সময় মাথাপিছু আয় ছিল ৩৭৪ মার্কিন ডলার। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ২৭৯২ মার্কিন ডলার। বিএনপির সময় বাজেট ছিল মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা, এখন বাজেট ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও প্রবৃদ্ধি গড়ে ৬.৭ শতাংশ। বিএনপির সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট। বর্তমান বাংলাদেশ বিশ্বে ৩৩তম অর্থনীতির দেশ।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শেখ সেলিম বলেন, আপনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করেছেন। কেউ কোনো দিন ভাবেনি যুদ্ধাপরাধীর বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে। প্রধানমন্ত্রী আপনার জীবনের ওপর হুমকি ছিল, বিদেশের চাপ ছিলো, অনেক রাষ্ট্রপ্রধান বিচার বন্ধ করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করেছিল। আপনি সব চাপ উপেক্ষা করে, বঙ্গবন্ধুর মতো সাহস দেখিয়ে মাথানত না করে খুনিদের বিচার করেছেন এবং রায় কার্যকর করেছেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতা গণতন্ত্রেও শত্রু, মানবতার শত্রু, রাষ্ট্রের শত্রু। জঙ্গি সন্ত্রাসীরা কখনও জনগণের কল্যাণ আনতে পারে না। সন্ত্রাসী, জঙ্গি, খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। আপনিই পারবেন, সেটা বঙ্গবন্ধু করেছিলেন বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা রাজনীতি করতে পারবে না। আপনি যদি এ বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতা বিরোধীদের নিষিদ্ধ করেন তাহলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা সহজে গড়ে তুলতে পারবো। বিএনপি-জামায়াত এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আবারও ষড়যন্ত্র আরম্ভ করেছে। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে বসে বিশ্বের বড় সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করে।
শেখ সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র ছিল, অন্যান্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের সাহায্য ছিল। আজও সেই ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এ বাংলাদেশকে , স্বাধীনতাকে, মুক্তিযুদ্ধকে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাঁচাতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবব্ধ থাকতে হবে বাংলাদেশে যাতে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতি করতে না পারে সেই জন্যে আমি বলছি এদের নিষিদ্ধ করে দেন। বঙ্গবন্ধু যেটা করেছিলেন, এরা যাতে বাংলাদেশে রাজনীতির নামে এ অরাজকতা, কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে। আর যাকেই ধরতে পারবেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা করতে হবে, এখানে কোনো দয়া, মায়ার কোনো কারণ নেই। বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলায় আসার পর যারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র বলে, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, সমাজতন্ত্র তো সংবিধানে দিয়েছি। আমার দেশের সংবিধান আমার দেশের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী হবে, ধার করা সমাজতন্ত্র হবে না। সে দিন তারা বঙ্গবন্ধুকে মারার পথ করে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর একটা চক্র বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। এর জন্য একটা কমিশন গঠনের কথা আগেও বলেছি, কারা কারা জড়িত ছিলো, কারা কারা ছিল বেরিয়ে যাবে। এটা হতে হবে পরবর্তী বংশধরদের জানার জন্য। যারা বঙ্গবন্ধুকে মারতে পারে তারা যেকোনো সময় যে কোনো ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারবে। তাদের শক্তি, ষড়যন্ত্র শক্তি অনেক শক্তিশালী, সেই শক্তি সেখানে অর্থ থাকে, অস্ত্র থাকে, বিদেশের সহায়তা থাকে এটা যেন বাংলাদেশে আর না ঘটে। যে গণতন্ত্রের ধাারা আমরা উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে যেন আমরা অগ্রসর হই।