দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহিদ ফারুকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পোলিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সোমবার নাজমিন আক্তার নামের ওই পোলিং কর্মকর্তা নৌকার পক্ষে সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরদারপাড়া এলাকায় নৌকা প্রার্থীর লিফলেট হাতে ভোট চান।একই সঙ্গে তিনি নৌকার কর্মীদের সঙ্গে স্লোগান দেন।
এ ঘটনার ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী অপর এক প্রার্থী সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি রিটানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
নাজমিন আক্তার বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর মধ্য কড়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং তিনি সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরদারপাড়া এলাকার ভোটার।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য নাজমিন আক্তারকে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ২১নং বাটনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি নির্বাচন কমিশন আয়োজিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেছেন। এখন শুধু সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য চিঠির অপেক্ষায় রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ওই আসনের একাধিক ভোটার জানান, এই আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন সালাহউদ্দিন রিপন।
সম্প্রতি নগরীর সরদারপাড়া এলাকায় নারীরা নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে নামেন। কয়েকজন নারী হাতে লিফলেট নিয়ে সড়ক ধরে নৌকার পক্ষে স্লোগান দেন। একই সঙ্গে তারা পথচারীদের হাতে হাতে লিফলেট বিলি করেন। ওই মিছিলের সামনে ছিলেন এবং স্লোগান দেন নাজমিন আক্তার।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নাজমিন আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার চাচি বরিশাল সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর রেশমি বেগমের অনুরোধে একদিন নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়েছিলাম। এরপরে নৌকার পক্ষে আর কোনো প্রচারণায় অংশ নেইনি।
তিনি আরো বলেন, ‘ভোটগ্রহণের জন্য পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ পেয়েছি। তবে পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে কোনো প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারণায় উপস্থিত থাকা যাবে না, সেটা ওই সময় মাথায় আসেনি। ’
স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন রিপন বলেন, ‘পোলিং কর্মকর্তা যখন নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান, তখন তার দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। বিষয়টি লিখিতভাবে সোমবার দুপুরে রিটানিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আমার অনুরোধ থাকবে, ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য এই বিষয়টি রিটানিং কর্মকর্তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। ’
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটগ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। আমি অফিসের বাইরে আছি। এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হবে। ’