ধনী হতে চাইলে যেসব সূত্র আপনাকে মানতেই হবে

ধনী হতে চাইলে যেসব সূত্র আপনাকে মানতেই হবে

ধনী ব্যক্তিরা কি সব সময় দামি গাড়িতে চড়েন, দামি পোশাক পরেন, ফার্স্ট ক্লাসে ভ্রমণ করেন? সব সময় তা না–ও হতে পারে। একাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার পর আবিষ্কার করা যাচ্ছে চমকপ্রদ কিছু বৈশিষ্ট্য।

  • ধনবান মানুষ সবাই মিতব্যয়ী। তাঁরা প্রতি রাতে বাইরে, হোটেল-রেস্তোরাঁয় খেতে যান না। কাউকে উপহার দেওয়ার সময় সবচেয়ে দামি উপহারটা কেনেন না। তাঁরা টাকাপয়সা অপচয় করেন না।
  • তাঁরা সঞ্চয় করেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁদের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাসটা গড়ে ওঠে। ছোটবেলায় প্রথম টিউশনি করে, কিংবা ধরা যাক, কারও হাতে মেহেদি লাগিয়ে দিয়ে যে আয়টা তাঁরা করেছেন, সেখান থেকেই কিছু টাকা তাঁরা সঞ্চয় করতে শুরু করেন। বড় হয়েও এ অভ্যাস তাঁরা বজায় রাখেন।
  • এমন ধনী ব্যক্তি আছেন, যাঁরা অনেক দামি গাড়ি ব্যবহার করেন না। একটা দামি গাড়ি থাকতে পারে, অপ্রয়োজনে অনেক গাড়ি কেনেন না।
  • এক ধনাঢ্য ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁরা বিমানে প্রথম শ্রেণির টিকিট কাটতে চান না। একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি বলেছেন, মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য লাখ লাখ টাকা বেশি খরচ করার মানে হয় না। সবাই তো একসঙ্গেই গন্তব্যে পৌঁছাবে।
  • তাঁরা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করেন। তাঁদের ভবিষ্যতকে নিরাপদ করতে চান।
  • ধনাঢ্যরা জানেন, মাসে বেশি টাকা আয় করা মানে ধনী হওয়া নয়। মাসিক আয় বেশি আর সম্পদশালী—দুটো ভিন্ন বিষয়। কাজেই তাঁরা সম্পদ বানানোর চেষ্টা করেন। মাসে অনেক আয় করে তা উড়িয়ে দেওয়া তাদের ধাতে নেই।
  • তাঁরা টাকার সবচেয়ে সুন্দর ব্যবহারে বিশ্বাস করেন। তাঁরা যখন চুল কাটাতে যান, সবচেয়ে দামি জায়গায় যান না। একজন ধনী ব্যক্তি বলেন, আমি ডিসকাউন্ট বা মূল্যহ্রাসের সুযোগ নিই।
  • আরেক ধনী ব্যক্তি বলছেন, তিনি ব্র্যান্ড বা নাম দেখে জিনিস কেনেন না। নামের জন্য বেশি টাকা খরচ করায় তিনি বিশ্বাস করেন না। তিনি বিশ্বাস করেন জিনিসের গুণে। যদি কম দামে ভালো জিনিস পাওয়া যায়, তাহলে শুধু নামের জন্য বেশি দাম কেন দেব? এই হলো তাঁর কথা। এ রকম অনেক ধনীকেই পাওয়া যেতে পারে।
  • ছোটখাটো অপচয় তাঁরা এড়িয়ে চলেন। দামি দোকানে কফি না খেয়ে টাকাটা বাঁচানো যায়। তা দিয়ে বড় কিছু করা যায়। যেমন বেড়ানোর জন্য টাকা জমানো।
  • জীবনযাপনে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা সাধারণত অনেক মিতব্যয়ী হন। যেমন তাঁরা বাসায় রান্না করে খান। নিজেদের বাগানে শাকসবজি চাষ করেন।
  • তাঁরা শো–অফ করেন না বা দেখিয়ে বেড়ান না। বড়লোকি দেখানোর জন্য বেশি বেশি খরচ না করে বরং টাকা খরচ করেন নিজেকে দক্ষ করার জন্য। জ্ঞান বাড়ানোর জন্য। প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য।
  • ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রচুর অনুরোধ সামলাতে হয়। লোকে সাহায্য চায়। তাঁরা সাহায্য করেন। কিন্তু চাহিবামাত্র করেন না। কেউ বলেন, আপনি নিজে কত জোগাড় করতে পারলেন, আমি তার সমপরিমাণ টাকা দেব বা আপনি এই কাজটা করে দিন। তার বদলে আমি এই টাকাটা আপনাকে পারিশ্রমিক হিসেবে দেব।
  • তাঁরা একটা টাকাও অকারণে খরচ করেন না।
  • দান করার সময় হয়তো উদার হস্তেই দান করেন, কিন্তু লেনদেনের সময় তাঁরা প্রতিটা পয়সার পাই টু পাই হিসাব রাখেন। ব্যবসার নীতি তাঁরা কঠোরভাবে মেনে চলেন।
  • কোনো বিনিয়োগের সময় তাঁরা দেখেন, এটা কত দিনে লাভজনক হবে। ব্যবসা মানে দান নয়। যে ব্যবসায় লাভ হয় না, তা টেকে না। কাজেই লাভ হয় না এমন জায়গায় তাঁরা পয়সা খাটান না।

একেক ধনী লোক হয়তো একেক রকম। বড় বাড়ি, বড় গাড়ি, ব্যক্তিগত জেট, সোনার কমোড—এ ধরনের বিলাসবহুল জীবনের কথাও আমরা শুনি বা পড়ি। তবে রিডার্স ডাইজেস্টকে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এ ধরনের পরামর্শই দিয়েছেন; যা থেকে অপচয় না করা, মিতব্যয়িতা, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিনিয়োগ করা, নিজের দক্ষতা বাড়ানোর মতো পরামর্শগুলোই উঠে এসেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS