‘সবাই অনলাইনে কত কিছুই তো করে। সামনে ঈদ, একটা কিছু চেষ্টা করে দেখা যাক,’ বলছিলেন এলাকার এক বড় ভাই। তখন করোনাকাল। প্রস্তাবটা শাহীন আলীর মনে ধরে। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার তালুককররা গ্রামে তাঁর বাড়ি। এলাকার আরও কয়েকজনকে নিয়ে অনলাইনেই শুরু করলেন গরুর ব্যবসা।
ঘুরে ঘুরে গ্রামের গরুগুলো দেখতেন শাহীন। পছন্দ হলে গৃহস্থদের সঙ্গে কথা বলতেন। বোঝাতেন, হাট পর্যন্ত গরু নেওয়া অনেক ঝক্কির কাজ। যদি অনলাইনে বিক্রি করা যায়, তাহলে কষ্ট কমে যাবে। গরুর মালিকেরা প্রস্তাবে রাজি হলে শুরু হতো ছবি তোলা, দাম নির্ধারণসহ অন্যান্য কার্যক্রম। এভাবে প্রথম বছরই ১৬টি গরু বিক্রি করে ফেলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশলের স্নাতকোত্তরের এই ছাত্র।
২০২০ ও ২০২১—দুই বছর ধরে অনলাইনে গরু বিক্রি করছেন শাহীন। সেই সময়কার গরুগুলো ছিল ছোট, দামেও কম। এখন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার কমে গরু কেনেন না, জানালেন শাহীন। আগে কোরবানির ঈদের দেড় থেকে দুই মাস আগে গরু কিনে বিক্রি করতেন। এখন নিজের খামার হয়েছে। সারা বছর গরু পালন করেন। পাশাপাশি ঈদের সময়ে গেরস্তদের কাছ থেকে গরু এনে ঢাকায় বিক্রি করেন।
শাহীনের অনলাইন উদ্যোগ এখন অফলাইনেও বিস্তৃত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক বন্ধু তাঁর ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। গরুগুলো লালন–পালন ও দেখাশোনার কাজ পরিবারের সদস্যরাই করেন। তবে কখন কী লাগবে, সেসব দেখভাল করেন শাহীন। এ ছাড়া গরুগুলোকে ঢাকায় এনে বিক্রি করার দায়িত্বও তাঁর।
শূন্য থেকে শুরু করা প্রকৌশলের এই ছাত্রের পুঁজি এখন প্রায় ১৫ লাখ টাকা। জানালেন, সামনের দিনগুলোতে গরুর ব্যবসা অব্যাহত থাকবে। সঙ্গে অনলাইন শিক্ষার প্রযুক্তি (এডুটেক) নিয়ে কাজ করতে চান।