ফরিদপুরে ৫ ঘণ্টায় ৩২ জনকে কামড়াল কুকুর

ফরিদপুরে ৫ ঘণ্টায় ৩২ জনকে কামড়াল কুকুর

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় ৫ ঘণ্টার মধ্যে নারী-শিশুসহ ৩২ জনকে কামড় দিয়েছে কুকুর। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে। একাধিক কুকুর তাঁদের কামড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কুকুরের কামড়ের শিকার হয়ে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩২ জন। তাঁরা ভাঙ্গা পৌরসভার সাতটি মহল্লা এবং আলগী, হামিরদী, ঘারুয়া ও কাউলিবেড়া ইউনিয়নের আটটি গ্রামের বাসিন্দা। ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুড়া গ্রামের শেখ খোকন বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় তিনি ভাঙ্গা পৌরসভায় কাজ শেষে করে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পথে কুকুরের কামড়ের শিকার হন।

কুকুরের কামড়ের শিকার হয়ে যাঁরা চিকিৎসা নিয়েছেন, তাঁরা হলেন ভাঙ্গা সরকারি কাজী মাহবুবউল্লাহ কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ঝর্ণা রানী মৃধা (৫৮), ভাঙ্গা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীকান্দা সদরদী মহল্লার টুটুল শেখ (৪৬), আলম (২০), আলেয়া বেগম (৬০), পাখি আক্তার (৬০), আকলিমা (৪০), নাজমা (৭), মতিয়ার শেখ (৩৭), একই ওয়ার্ডের রায়পাড়া সদরদী মহল্লার সিফাত (২০), রিজিয়া বেগম (৬০), তিন নম্বর ওয়ার্ডের চণ্ডীদাসদি মহল্লার আবির (১২), জামাল মিয়া (৪৭), জমেলা বেগম (৬৫), আলো রানী (৩৫), কলেজ পাড়ার রাকিব মাতুব্বর (৫৫), আট নম্বর ওয়ার্ডের হোগলাডাঙ্গী মহল্লার আশরাফ (৫৫), জাহানারা বেগম (৩৫), চার নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব হাসামদিয়া মহল্লার আসমা (৬০), মধ্যপাড়া হাসামদিয়া মহল্লার মিজানুর মোল্লা (৪৭), নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার মনি (২৭), ভাঙ্গার আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামের রাজু (২০), সোহেল (২৩), কাচিখালী গ্রামের হাবিবুর রহমান (২৪), ছোট খারদিয়া গ্রামের সাদিয়া (৪), পীরের চর গ্রামের জান্নাতি (১২), চরকান্দা গ্রামের সেলিম মোল্লা (৩৫), হামিরদী ইউনিয়নের ছোট হামিরদী গ্রামের খোকন মিয়া (৪৮), কাউলিবেড়া ইউনিয়নের কাউলিবেড়া গ্রামের সানুজ্জামান (৩২) ও ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুড়া গ্রামের শেখ খোকন (৪৫)।

ঝর্ণা রানী মৃধা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে তিনি কলেজ থেকে হেঁটে কাফুরিয়া সদরদী মহল্লায় তাঁর ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলেন। হঠাৎ বিদ্যুৎ–গতিতে একটি কুকুর এসে তার বাঁ পায়ে কামড় দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে তাঁর পায়ের মাংস ছিঁড়ে গেছে।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা প্রাণেশ চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, সাম্প্রতিককালে এক দিনে কুকুরের কামড়ের শিকার হয়ে এত ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে আসেননি। দফায় দফায় কুকুরের কামড়ের রোগী দেখে প্রথম পর্যায়ে হতবাক হয়ে যান। সবাইকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। তবে কাউকে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়নি। প্রথম ডোজের তিন দিন পর দ্বিতীয় ডোজ এবং সাত দিন পর তৃতীয় ডোজ ইনজেকশন নিতে তাঁদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


বিষয়টি আতঙ্কের উল্লেখ করে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিমউদ্দিন বলেন, বর্তমানে কুকুর মারার ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। পাশাপাশি কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।

এদিকে একই দিন বিড়ালের কামড়ে আহত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন দুজন। তাঁরা হলেন ভাঙ্গার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামের জাবের (১২) ও শাওন (৩৪)।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS