এবার জয়পুরহাট সদর থানা এলাকায় মো. মেহেদী (২৫) নামে এক যুবককে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ ২১৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জয়পুরহাট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-১ আদালতে মামলাটি করেন মেহেদীর স্ত্রী জেসমিন আক্তার সৃষ্টি।
আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুর রহমান মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করতে জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মোমেন ফকির নিশ্চিত করেছেন।
মেহেদী হত্যা মামলাসহ জয়পুরহাট জেলায় শেখ হাসিনার নামে এ পর্যন্ত দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলায় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুই মামলাতেই শেখ হাসিনাকে নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ছাড়াও মেহেদী হত্যা মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- জয়পুরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জয়পুরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সামছুল আলম দুদু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনফুজুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান, ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সদ্য প্রত্যাহার হওয়া চেয়ারম্যান দুলাল মিয়া সরদার, আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের সদ্য প্রত্যাহার হওয়া চেয়ারম্যান মোকছেদ আলী, পাঁচবিবি পৌরসভার সদ্য প্রত্যাহার হওয়া মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের ভাই আবু সাঈদ আল মাহবু্ব চন্দন, ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার নাদিম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা, সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক রেজা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করার পর জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের উত্তেজিত জনতা ধাওয়া করলে তারা অস্ত্রশস্ত্র, ককটেল, লাঠি, হাঁসুয়া, ইট-পাথরসহ জয়পুরহাট সদর থানার ভেতরে অবস্থান নেন। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে উত্তেজিত জনতা থানার বাইরে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। উত্তেজিত জনতা একপর্যায়ে থানার পূর্ব ও পশ্চিম দেওয়াল ভেঙে ভেতরে ঢুকলে থানায় অবস্থানরত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ককটেল, পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ করেন ও গুলি ছুড়তে থাকেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে মেহেদী আহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।