ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) থেকে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের স্ব স্ব পদে (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতিসহ) চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন। একইসাথে এফবিসিসিআই সার্ভিস রুলস-১৯৯০ অনুযায়ী প্রাপ্য সার্ভিস বেনিফিট ও অন্যান্য বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের জোর দাবি জানান তারা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) মতিঝিলস্থ এফবিসিসিআই ভবনের সামনে এফবিসিসিআই থেকে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতিসহ) এবং এফবিসিসিআইয়ের সার্ভিস রুলস অনুযায়ী প্রাপ্য আর্থিক পাওনাদি প্রদানের জন্য এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানান। এ বিষয়ে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়, যা সংগঠনের মহাসচিব গ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে জানানো হয়, ২০১৯-২০২১ মেয়াদকালের পরিচালনা পর্ষদে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শেখ ফজলে ফাহিম দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালে দেশে যখন করোনা মহামারির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সার্বিকভাবে জনজীবনে মারাত্মক সংকট নেমে আসে, সেই দুর্যোগময় মুহূর্তে এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম দলীয়করণের নামে ৬২ জন কর্মকর্তা- কর্মচারীকে এফবিসিসিআইয়ের চাকরি থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেন।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস রুলস-১৯৯০ অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য সার্ভিস বেনিফিট থেকে বেআইনি ও নির্দয়ভাবে বঞ্চিত করেন। এ অন্যায় পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কোনরকম আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া থেকে বিরত থাকার বিষয়েও তিনি নানাভাবে হুমকি দেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে মতিঝিল থানায় কেবল জিডি দায়ের করতে পেরেছিলেন।
আরও জানানো হয়, একটি প্রতিষ্ঠানে জীবনের দীর্ঘ সময় সর্বোচ্চ এফোর্ট দেওয়ার পর অবহেলিত ও অসম্মানিত হওয়ার মাধ্যমে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে এবং মানসিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হন। অবৈধ ও বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুতি এবং পাওনা বেতন-ভাতাদি সম্পূর্ণরূপে না পাওয়ায় আর্থিক সংকট ও মানসিক যন্ত্রণায় ইতোমধ্যে এফবিসিসিআইয়ের ৩ (তিন) জন অফিসিয়াল এ এফ আইনুল হুদা (কর্মকর্তা), ফজলুল হক (ড্রাইভার) এবং আব্দুল বারেক (সিকিউরিটি গার্ড) হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন সময়ে নিজেদের সমস্যা নিরসনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালক (তৎকালীন পরিচালক), বাণিজ্য সংগঠনসমূহ বরাবরে আবেদন করেছেন। গত ১২ জুন ২০২১ তারিখে এফবিসিসিআই এর প্রেসিডেন্ট বরাবর চাকরিতে পুনর্বহাল ও সমস্ত বকেয়া পাওনাদি পরিশোধের জন্য আবেদন করেছেন, যার অনুলিপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মহাপরিচালক (তৎকালীন পরিচালক) বরাবর দেওয়া হয়। পরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এবং ৬ মার্চ ২০২২ তারিখে আইনজীবীর মাধ্যমে এফবিসিসিআই কর্তৃপক্ষকে ডিমান্ড নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও সার্ভিস বেনিফিটসহ বেতনভাতাদি পরিশোধের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ অবস্থায়, এফবিসিসিআইয়ের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের ওপর অন্যায় ও অমানবিক পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদেরকে স্ব স্ব পদে (জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতিসহ) চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানান।